গাজা দখলের পরিকল্পনায় নেতানিয়াহু, বিশ্বনেতাদের তীব্র প্রতিক্রিয়া

গাজা পুরোপুরি দখলের যে পরিকল্পনা নিয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, তাতে কোনো সমাধান দেখতে পাচ্ছেন না বিশ্বনেতারা। তারা মনে করেন, দখলদার সেনাবাহিনী ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নামলে গাজায় কেবলই ‘ধ্বংস’ ডেকে আনবে। নেমে আসবে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। পাশাপাশি সংকটের সমাধানের আশাও তারা দেখছেন না। ইতোমধ্যে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজা শহরের নিয়ন্ত্রণ দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। এতে নিন্দার ঝড় উঠেছে পুরো বিশ্বে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান অনুমোদনকে ‘ভুল’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি উভয়পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি গাজায় আক্রমণ আরও তীব্র করতে ইসরায়েলি পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানান। তার বক্তব্য, এই পদক্ষেপ সংঘাতের অবসান কিংবা জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে কোনো সাহায্য করবে না। বরং এটি কেবল আরও রক্তপাত ঘটাবে।

গাজা শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ব্যাপারে ইসরায়েলের পরিকল্পনা নিয়ে গম্ভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চান। অবিলম্বে এই বিপজ্জনক পদক্ষেপ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। এক বার্তায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এএফপিকে বলেছেন, গাজা ফিলিস্তিনি জনগণের এবং এটি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এখানে মানবিক সংকট লাঘব করার এবং জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার সঠিক উপায় হলো তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি।

জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ বলেছেন, জার্মানি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গাজায় ব্যবহৃত হতে পারে এমন কোনো সামরিক সরঞ্জাম ইসরায়েলে রপ্তানির অনুমোদন দেবে না। তিনি বলেন, গাজা দখলে ব্যাপক হামলার পরিকল্পনার অনুমোদন আরও কঠোর সামরিক পদক্ষেপের নামান্তর। এটি পরিস্থিতি ক্রমশ কঠিন করে তুলবে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক মনে করেন, গাজার ওপর সম্পূর্ণ সামরিক দখলে ইসরায়েলি সরকারের পরিকল্পনা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের রায়ের পরিপন্থী। কারণ আদালতের রায় রয়েছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গাজায় ইসরায়েলের দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে হবে, যাতে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়ন করা যায়।

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস গাজায় নেতানিয়াহুর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দখলের ঘোষণার নিন্দা জানিয়েছেন। তার কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনা সম্পূর্ণ অবৈধ ও তা অপরাধ। নতুন করে ব্যাপক হামলা গণহত্যা ও অনাহারে মৃত্যু ডেকে আনবে।

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস সতর্ক করে দিয়েছে, যুদ্ধ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গাজায় ইসরায়েলি বন্দিদের ‘বলিদান’ করার সমান হবে। নেতানিয়াহু কখনও ইসরায়েলি বন্দিরে ভাগ্য নিয়ে ভাবেন না।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ