ইতালির রাজধানী রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসে দুর্নীতি ,স্বজনপ্রীতি, পাসপোর্ট দালালী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রবাসীদের সাথে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এসব নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে দূতাবাসের সামনে। পাসপোর্ট দালালির লাগাম কিছুটা টেনে ধরার চেষ্টা করেছেন নতুন রাষ্ট্রদূত মোঃ শামীম আহসান। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের অনেক আগ থেকেই রোম দূতাবাসের এসব অভিযোগ সম্পর্কে অবহিত। আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে একজন প্রত্যক্ষদর্শী ইতালি প্রবাসী সেবাপ্রার্থী কর্মকর্তাদের দুর্ব্যবহারের একটি চিত্র তুলে ধরে পাঠিয়েছেন। পাঠকদের জন্য আমরা তা হুবুহু তুলে ধরছি। পাশাপাশি এ ব্যাপারে দূতাবাসে যোগাযোগ করে কোন কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
রোম দূতাবাস: হোয়াটসঅ্যাপ
কর্মকর্তাদের দুর্ব্যবহার চরমে:
দূতাবাসে উপস্থিত হলাম ৩ঃ৪৫ মিনিটে। গেটের সামনে এবং আশেপাশে গোটা তিরিশ অপেক্ষমান বাংলাদেশী প্রবাসী ভাই-বোন। যাই হোক প্রবেশ করলাম ভেতরে খুব বেশী ভিড় নেই, সবাই অপরিচিত শুধুমাত্র একজন বোন পরিচিত ছিলো ,উনি সকাল ১১ টায় প্রবেশ করেছেন বলে জানালেন। কাউন্টারের পেছনে কেউ নেই, বেশ কিছুক্ষণ পর পাশ থেকে এক বাংলাদেশী ভাই কিছুটা বিরক্তির সাথে ডাকলেন দেখার কি কেউ নেই?পেছন থেকে এক বোন ওই ভাইকে ডেকে বললেন ভাই বেশী কিছু বইলেন না দিন শেষে ওদের ছাড়া তো উপায় নাই, পরে আবার রাগ করে বের করে দিবে। ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিচ্ছিলাম আমি নিজেও। এবার একজন আসলেন। এসেই ফোন হাতে ভীষণ ব্যস্ত মনে হলো। কাউকেই পাত্তা দিচ্ছেন না। এগিয়ে গিয়ে বললাম, ভাই যদি আপনাদের কার্যক্রম কোন কারণে বন্ধ থেকে থাকে কাউন্টারের সামনে লিখে দিলে ভালো হয়।
উনি রেগে গিয়ে বললেন ,কে আপনি?
আমি বললাম, একজন সেবা প্রার্থী
বললেন, আপনি পেছনে গিয়ে দাঁড়ান।
আমি বললাম কেন ভাইয়া আমার সিরিয়াল তো এখন। এই যে দেখেন টোকেন নাম্বার ডিসপ্লেতে চেক করেন।
উনি বললেন, আপনাকে পেছনে যেতে বলেছি যান।
বললাম যাবো না। দায়িত্বশীল কাউকে ডাকেন । উদাহরণ স্বরূপ প্রথম সচিব মোঃ সাইফুল ইসলাম (পাসপোর্ট ও ভিসা)- উনি ঠিক ওই সময়টায় গ্লাসের অপর প্রান্তে বসা ছিলেন । হয়তো আমাদের কথোপকথন শুনেন নাই। কিন্ত অফিসার জবাব দিলেন উনাকে আমি চিনিনা।
আমি বললাম, আমি চিনি ওই যে আপনার পেছনে বসা উনাকে ডাকেন।
উনি জবাবে জিজ্ঞেস করলেন কে আপনি, আমি তখনো বলি নাই আমি পেশায় ক্ষুদ্র একজন গণমাধ্যমকর্মী। কেননা আমি দেখতে চেয়েছিলাম আসলে কি ঘটে ! শুধু বললাম ওকে ভাই, আমি পেছনে গেলাম কিন্ত এটা অনিয়ম করলেন।
পরে ডাক পড়লো আরেক ভাইয়ের । উনিও কিছুটা রাগান্বিতভাবে বললেন ভাই আপনাদের নিয়ম কানুন প্রতিদিন চেঞ্জ হয়?
জবাবে কর্মকর্তা রেগে ফায়ার হয়ে বললেন আপনি লাইনের পেছনে যান। সেই বেচারা বললো না গেলে কি করবেন ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবেন?
সাথে সাথে সেই কর্মকর্তা সিকিউরিটি ডেকে লোকটিকে বের করে দিলেন সবার সামনে।
ভেবে দেখলাম আজ যদি আমিও আর এক ইঞ্চি বেশী কথা বলতাম আমাকেও হয়তো ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়া হতো প্রবাসে আমাদের একমাত্র আশ্রয়ের ঠিকানা থেকে।
মনে মনে ভাবছিলাম একটি কথাই স্বাধীনতার ৫২ বছরে এই যদি হয় আমাদের স্বাধীনতা তাহলে কি প্রয়োজন ছিলো এতো রক্তের এতো যুদ্ধের?