কারাগারে ভিডিওকলের সুযোগ পাবেন বন্দিরা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, করোনার কারণে বন্দিদের দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ। তাদের পরিবারের সঙ্গে সপ্তাহে একদিন ১০ মিনিট মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। মোবাইলে কথা বলার পাশাপাশি ভিডিওকলের ব্যবস্থা করার জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে।

রোববার সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর কমপ্লেক্সে ১২তম ব্যাচ ডেপুটি জেলার এবং ৫৯তম ব্যাচ কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কারাগারে দায়িত্ব পালন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় ভিন্নতর ও চ্যালেঞ্জিং। কারাগারের নিরাপত্তা বিধানের পাশাপাশি বন্দিদের প্রতি মানবিক আচরণ প্রদর্শন ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে অপরাধীদের চরিত্র সংশোধন করে সমাজে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত বর্তমান সরকার প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় কারাগারকে সংশোধনাগারে রূপান্তর করতে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছে। কারাগারের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে এবং বৃদ্ধি করা হয়েছে বন্দিদের সুযোগ-সুবিধা।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলেই ২০০ বছরের ইতিহাসের সকালের নাস্তায় রুটি ও গুড়ের পরিবর্তে সপ্তাহে চার দিন সবজি-রুটি, দুদিন খিচুড়ি, একদিন হালুয়া-রুটি দেওয়া হচ্ছে, যা যুগান্তকারী পরিবর্তন। বাংলা নববর্ষসহ বিশেষ দিবসগুলোতে উন্নত মানের খাবারের জন্য বন্দি প্রতি বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু তার জীবন ও যৌবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময় কাটিয়েছেন কারাগারের চার দেয়ালের ভেতরে। তিনি বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারাগারের ভেতরে বসেই। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং ‘কারাগারের রোজনামচা’ নামক গ্রন্থ দুটিতে বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন এবং কারাগারের বিষয়াবলি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এই কারাগারেই নির্মমভাবে শহিদ হয়েছেন জাতীয় চার নেতা। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যকন্যা প্রধানমন্ত্রী শৈখ হাসিনা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে একাধিকবার কারাবরণ করেছেন।

তিনি বলেন, আমরা জানি কারাগার ক্রিমিন্যাল জাস্টিস সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জনজীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের কারাগারে নিরাপদে আটক রাখা হয়। ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনকারীদের সাজা কার্যকর করা হয়েছে কারাগারে। এভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস ও কারাগারের নাম একসঙ্গে মিশে আছে I

আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, কারাগার এখন কেবল শাস্তি কার্যকর করার জায়গা নয়; বরং কারাবন্দিদের বিভিন্ন প্রকার কর্মমুখী প্রেষণামূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যম। দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করে সমাজের মূলধারায় ফিরিয়ে দেওয়ার ন্যায় গুরুদায়িত্ব পালন করছে কারাগারগুলো। দেশের সব কেন্দ্রীয় কারাগারসহ অধিকাংশ জেলা কারাগারে বন্দিদের যুগোপযোগী বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। বন্দি শ্রমে উৎপাদিত পণ্যের আয়ের অর্ধেক বন্দিকে দেওয়া হচ্ছে ।

তিনি আরও বলেন, কারাগারের নিরাপত্তা বিধানের পাশাপাশি বন্দিদের প্রতি মানবিক আচরণ প্রদর্শন ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে অপরাধীদের চরিত্র সংশোধন করে সমাজে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

পরে মন্ত্রী রিক্রুট ডেপুটি জেলাদের রেঙ্ক ম্যাচ প্রদান এবং রিক্রুট প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। প্রশিক্ষণার্থীদের অন-আর্মড কম্ব্যাট ও পিটি ডিসপ্লে উপভোগ করেন।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন, কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএসএম আনিসুল হক উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on linkedin
LinkedIn
Share on print
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ