রাষ্ট্রীয় সভা কিংবা আন্তর্জাতিক সম্মেলন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পরনে থাকে দেশটির জাতীয় প্রতীক খচিত সোয়েট শার্ট কিংবা পোলো শার্ট। বেশিরভাগ সময়ই তাঁকে সামরিক ধাঁচের কালো, ধূসর বা খাকি কার্গো প্যান্ট পরতে দেখা যায়।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারির বৈঠকেও কালো সোয়েট শার্ট পরেছিলেন জেলেনস্কি। যা নিয়ে হোয়াইট হাউসে আলাপ উঠলে বেশ বিব্রত হতে হয় তাঁকে। টাই না পরায় বেশ আপত্তি জানিয়েছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। এবারও একই ঘটনার সাক্ষী হলো হোয়াইট হাউস। তবে সে মুহুর্ত আগেরবারের মতো গুরুগম্ভীর ছিল না।
বৈঠক চলাকালে বিবিসির সাংবাদিক বার্ন্ড ডেবাসম্যান জুনিয়র লাইভ ব্লগে লিখেন, ফেব্রুয়ারির বৈঠকে জেলেনস্কির পোশাক নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন রক্ষণশীল আমেরিকান গণমাধ্যম ‘রিয়েল আমেরিকাস ভয়েস’ এর সাংবাদিক ব্রায়ান গ্লেন। সোমবারও গ্লেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের পোশাক নিয়ে জানতে চান।
তবে এবার জেলেনস্কির জবাব শুনে মনে হয়, তিনি আগে থেকেই এমন প্রশ্নের জন্য প্রস্তত ছিলেন। এবার সাধারণ সামরিক পোশাকের বদলে গাঢ় স্যুট পরে এসেছিলেন জেলেনস্কি। প্রশ্নের জবাবে মজা করে উল্টো গ্লেনকে নিয়ে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ‘আপনিও (গ্লেন) তো আগের মতো একই স্যুট পরেছেন।’ এমন জবাব শুনে উপস্থিত সাংবাদিক ও কর্মকর্তাদের মধ্যে হাসির রোল পড়ে। ট্রাম্পও মন্তব্য করেন, এবার স্যুটে জেলেনস্কিকে বেশ ভালো দেখাচ্ছে।
পোশাক কেন গুরুত্বপূর্ণ
সাংবাদিক বার্ন্ড ডেবাসম্যান জুনিয়র লিখেছেন, পোশাক নিয়ে এমন ঘটনা অনেকের কাছে তুচ্ছ মনে হতে পারে। কিন্তু হোয়াইট হাউসে শিষ্টাচার পালনকে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও তাঁর অফিসের মর্যাদা ও শিষ্টাচারকে বেশ গুরুত্ব দেন। গতবার এর ব্যত্যয় হওয়াতেই জেলেনস্কির পোশাক নিয়ে বিতর্কটা জোরালো হয়েছিল।
মার্কিন গণমাধ্যম অ্যাক্সিওস এবারের বৈঠকের আগ মুহুর্তে জেলেনস্কির পোশাক নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে লেখা হয়েছে, হোয়াইট হাউস এবার আগে থেকেই জেলেনস্কির পোশাক পরার পরিকল্পনা সম্পর্কে ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চেয়েছিল।
সূত্রের বরাত দিয়ে অ্যাক্সিওস লিখেছে, ইউক্রেনের কর্মকর্তারা হোয়াইট হাউসকে আগে থেকেই জানিয়েছিল প্রেসিডেন্ট এবার কালো জ্যাকেট পরবেন। যা তিনি গত জুনে নেদারল্যান্ডসে হওয়া ন্যাটো সম্মেলনে পরেছিলেন। এটা স্যুটের মতো কিন্তু পুরোপুরি স্যুট না।
২০২২ সালে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর ন্যাটোর ওই সম্মেলনেই প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ধাঁচের জ্যাকেট (স্যুটের মতো) পরেছিলেন জেলেনস্কি। তখনই এ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক মার্কিন কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে বলেন, ওই সম্মেলনে জেলেনস্কির পোশাকের কারণেই ট্রাম্পের সঙ্গে কথোপকথন ভালো হয়েছিল। তাঁকে পাগলাটে দেখাচ্ছিল না। বরং দেখে মনে হচ্ছিল তিনি ন্যাটোতে থাকার মতো।
অ্যাক্সিওস লিখেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন নেতাদের চেহারা ও পোশাকে মর্যাদার ছাপ থাকা উচিত। তাঁর কাছে, বিশ্বনেতা মানেই তিনি স্যুট পরবেন। আর এ প্রসঙ্গ ধরেই এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, জেলেনস্কি ট্রাম্পকে প্রভাবিত করার দক্ষতা বেশ ভালোই রপ্ত করেছেন।





