সীমান্তে ফের মিয়ানমারের গোলাগুলি, আতঙ্কে বাংলাদেশিরা

আতঙ্ক কাটছেই না বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তবাসীর। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গোলায় শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গা হতাহতের পরও শনিবার সকালে ফের গোলা নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সীমান্তবর্তী এলাকায়।

ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। হঠাৎ হঠাৎ বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে ঘুমধুম সীমান্ত অঞ্চলের মানুষ। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা ঘুমধুম সীমান্তে। উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় সীমান্ত অঞ্চলে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা পার্শ্ববর্তী এলাকায় আত্মীয়স্বজনের বাসাবাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন।

এদিকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বান্দরবানের ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রটি সরিয়ে পার্শ্ববর্তী কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, শনিবার কুতুপালং বিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ঘুমধুম কেন্দ্রের ৪৯৯ জন পরীক্ষার্থী। এদের মধ্যে ঘুমধুম ইউনিয়নের পরীক্ষার্থী ছিল ১৭৫ জন। অন্যরা কক্সবাজারের কুতুপালং-বালুখালী স্কুলের পরীক্ষার্থী।

সীমান্ত পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। শিক্ষার্থীদের মতোই সীমান্ত অঞ্চলে বসবাসকারী নাগরিকদের নিরাপত্তায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসন জরুরি সভাও করেছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের কোনাপাড়া নোম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় মিয়ানমারের ছোড়া মর্টারশেল বিস্ফোরণে শুক্রবার মৃত্যু হয় রোহিঙ্গা যুবক মো. ইকবালের। আহত আরও পাঁচজন রোহিঙ্গা চিকিৎসাধীন রয়েছে বিভিন্ন হাসপাতালে।

এ ঘটনায় ঘুমধুম ইউনিয়নের ঘুমধুম, তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, রেজু-আমতলী সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সীমান্ত সুরক্ষায় সতর্কাবস্থায় রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে গোটা ঘুমধুম ইউনিয়নের মানুষ। সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। কখনো কখনো বিকট শব্দে কাঁপছে ঘুমধুমবাসী। সীমান্তবাসীদের অনেকে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় নিজেদের বাসাবাড়ি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে আত্মীয়স্বজনের বাসাবাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছে।

সীমান্তের বাসিন্দাদের দাবি- মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মি (এএ) সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে মিয়ানমার সরকার বাহিনীর মধ্যে আস্তানা, ক্যাম্প দখলের যুদ্ধ চলছে। আরাকান আমির আস্তানা ধ্বংসে মিয়ানমার বাহিনী যুদ্ধবিমান, ফাইটিং হেলিকপ্টার থেকে গোলাগুলি ও গোলা নিক্ষেপ করছে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ