সাকিবকে আর বাংলাদেশের হয়ে খেলতে দেওয়া হবে না: উপদেষ্টা আসিফ

বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসানকে ঘিরে নতুন বিতর্ক তৈরি হলো। রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে আগেই জাতীয় দলে ফেরাটা অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল তার। এবার যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া সরাসরি জানিয়ে দিলেন, আর কখনো বাংলাদেশ দলে খেলতে পারবেন না সাকিব।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর-কে সোমবার রাতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আসিফ বলেন, ‘তাকে (সাকিব) বাংলাদেশের পতাকা বহন করতে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশের জার্সির পরিচয় বহন করতে দেওয়া, এটা আমার পক্ষে কোনোভাবেই সুযোগ করে দেওয়া সম্ভব না। ইতোপূর্বে এটা আমি বিসিবিকে না বললেও এখন আমার বোর্ডের প্রতি স্পষ্ট নির্দেশনা থাকবে, সাকিব আল হাসান আর কখনো বাংলাদেশ টিমে খেলতে পারবেন না।’

কেন এমন সিদ্ধান্ত, সেটাও ব্যাখ্যা করেছেন আসিফ মাহমুদ, ‘যতবার তিনি (সাকিব) দেশে আসার জন্য চেয়েছেন, খেলার জন্য চেয়েছেন, বলেছেন “আমাকে জোর করে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। আমি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। আমি শুধু এমপি ইলেকশনটা করেছি এলাকার মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছি।” কিন্তু আসল সত্যটা তো হচ্ছে, তিনি আসলে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠেভাবে জড়িত, যার প্রমাণ আমরা পেলাম।’

মূলত সাকিব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার ভার্চুয়াল লড়াই শুরু হয়েছে রোববার রাত ৯টার পর। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে নিজের সঙ্গে তোলা একটি ছবি পোস্ট করে সাকিব লিখেছিলেন, ‘শুভ জন্মদিন, আপা।’

এরপরই আসিফ মাহমুদ ফেসবুকে লিখেন, ‘একজনকে পুনর্বাসন না করায় সহস্র গালি দিয়েছেন আপনারা আমাকে। বাট আই ওয়াজ রাইট। ইন্ড অব দ্য ডিসকাশন।’

সেই পোস্টের জবাবে সাকিব লিখেছিলেন, ‘যাক শেষমেশ কেউ একজন স্বীকার করে নিলেন যে তাঁর জন্য আমার আর বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দেওয়া হলো না, বাংলাদেশের জন্য খেলতে পারলাম না!’

পরদিন বিকেলে ফের ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া দেন আসিফ, ‘ভাইয়া, আমাকে জোর করে নমিনেশন দেওয়া হয়েছিল। আমি শুধু নির্বাচনটাই করেছিলাম, আওয়ামী লীগের দলীয় রাজনীতিতে জড়িত হইনি। ইউ নো হু। যার হাত ছাত্র-জনতার রক্তে রঞ্জিত, তাকে বাংলাদেশের পতাকা বহন করতে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। বোর্ডের কর্তারা একাধিকবার রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করতে বললেও তা না করে বরং খুনিদের এনডোর্স করা ছাড়াও শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারি, মানি লন্ডারিং, ফিন্যান্সিয়াল ফ্রড করা কাউকে কেন শুধু ভালো ক্রিকেটার বলেই পুনর্বাসন করতে হবে? আইন সবার জন্য সমান, ফেস ইট।’

এদিকে শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানানোর কারণ জানতে চাইলে চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর-কে সাকিব বলেন, ‘সে (শেখ হাসিনা) তো সব সময় সিরিয়াসলি খেলা ফলো করেছে, খেলা দেখছে। তাই না? খেলার সঙ্গে যুক্ত এবং ওতপ্রোতভাবেই যুক্ত ছিলেন। তো সেখান থেকেই একটা সম্পর্ক হয়েছে। সেটা রাজনীতির আগে থেকেই। সেই জায়গা থেকে আমি একজনকে উইশ করতেই পারি। তা ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্য, কাউকে কোনো ইঙ্গিত, এমন কোনো কিছুই না।’

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের সময় সাকিব ছিলেন দেশের বাইরে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি হলেও এরপর আর দেশে ফিরতে পারেননি তিনি। বর্তমানে সাকিবের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, শেয়ার কেলেঙ্কারি ও দুদকের মামলাও চলমান।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ