ভরা শীতেও তুষার নেই কাশ্মীরে

ফি বছর শীত আসতেই নতুন রূপে সেজে উঠে ভারতের হিমালয়ান পর্বতমালার সবচেয়ে বড় উপত্যকা ‘কাশ্মীর’। তুষারধবল সাজে সজ্জিত প্রকৃতি রানির এক মনোমুগ্ধকর রূপ। যাকে ‘পৃথিবীর স্বর্গ’ বলেও অভিহিত করা হয়। সাদা তুষার দেখতে প্রতি শীতেই সেখানে পর্যটকদের ভিড় জমে। কিন্তু নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এ প্রকৃতি এবার একেবারেই ভিন্ন মূর্ত ধারণ করেছে। কাশ্মীরের মনোরম শহর গুলমার্গে এবারের শীতে তুষার পড়েনি। সাদা বরফে ঢাকা পর্বতগুলো শুকিয়ে প্রায় বাদামি ও সবুজ রং ধারণ করেছে। ভরা শীতেও তুষার নেই কাশ্মীরে! বিবিসি।

প্রত্যেক বছরেই হাজার হাজার পর্যটক শীতকালে স্কিইং (বরফে খেলা বা লাফানোর মতো কার্যকলাপ) এবং দর্শনীয় স্থানগুলো উপভোগ করতে কাশ্মীরে যান। কিন্তু এ বছর তুষারপাতের অনুপস্থিতিতে এই অঞ্চলের পর্যটনশিল্প ভেঙে পড়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, গত জানুয়ারিতে প্রায় ১ লাখ পর্যটক কাশ্মীরে গিয়েছিলেন।

কিন্তু এ বছর সেই সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তুষারহীন শীত অঞ্চলটির অর্থনীতিতে বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলবে। কারণ, জম্মু ও কাশ্মীরের জিডিপির প্রায় ৭ শতাংশ পর্যটন খাত থেকে আসে। এটি কৃষিকাজ এবং জল সরবরাহকেও প্রভাবিত করবে। কারণ, স্বল্প তুষারপাত ভূগর্ভস্থ জলের মজুত পর্যাপ্তভাবে পূরণ করবে না। এদিকে জলবায়ু সংকটের ফলে অঞ্চলটিতে বৃষ্টিপাতের ঘাটতিও দেখা গেছে। জম্মু ও কাশ্মীরের আবহাওয়া বিভাগ ডিসেম্বরে ৭৯ শতাংশ এবং জানুয়ারিতে ১০০ শতাংশ বৃষ্টিপাতের ঘাটতি রেকর্ড করেছে। এছাড়া এবারের শীতে কাশ্মীরের বেশির ভাগ জায়গায় তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৪৩ থেকে ৪৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট) বেড়েছে।

সাধারণত এই অঞ্চলে ২১ ডিসেম্বর থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারি তুষারপাত হয়। এই সময়ে পাহাড় এবং হিমবাহগুলো তুষার দিয়ে ঢেকে যায়। তবে গত কয়েক বছর ধরেই এই অঞ্চলে তুষারপাত কমছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, তুষার না থাকায় পর্যটকরা তাদের রিজার্ভেশন বাতিল করেছেন। গুলমার্গ হোটেলিয়ার্স ক্লাবের সভাপতি আকিব ছায়া বলেছেন, ৪০ শতাংশের বেশি হোটেল রিজার্ভেশন বাতিল করা হয়েছে। নতুন বুকিং বর্তমানে আটকে আছে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ