বজ্রপাতে চার কিশোরসহ ১০ জনের মৃত্যু

ময়মনসিংহ, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ ও নাটোরে বজ্রপাতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ময়মনসিংহে ৬ জন, সিরাজগঞ্জে দুইজন ও জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে একজন মারা গেছে।

ময়মনসিংহ ও নান্দাইল প্রতিনিধি জানান, নান্দাইলে ফুটবল খেলার সময় তিন কিশোর এবং সদর ও ধোবাউড়া উপজেলায় মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে তিন ব্যক্তি মারা যায়। শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

নান্দাইল থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, শুক্রবার দুপুর একটার দিকে নান্দাইল উপজেলার গাঙ্গাইল ইউনিয়নের কঙ্করহাটি গ্রামে বৃষ্টিতে ভিজে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে তিন কিশোরের শরীর ঝলসে যায়। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।

মৃতরা হলেন- কঙ্করহাটি গ্রামের শহিদুল্লার ছেলে আবু সাঈদ (১৪), হাদিস মিয়ার ছেলে শাওন মিয়া (১৩) ও বিল্লাল হোসেনের ছেলে স্বাধীন (১৪)। ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাদের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয় বলেও জানান তিনি।

এদিকে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার দড়ি কুষ্টিয়া গ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের নালায় মাছ ধরতে গিয়ে হাসেন আলী মন্ডলের ছেলে বাক্কার হোসেন (৪০) ও পচা মিয়া ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩০) নামে আরও দুইজন বজ্রপাতে মারা যায় বলে কোতোয়ালী থানার পুলিশ জানিয়েছে। এছাড়া ধোবাউড়া উপজেলার চরমুহিনী গ্রামের আবু সাঈদ (৩০) নামে এক যুবকও মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে মারা যায়।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জে পৃথক বজ্রপাতে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ শহর থেকে নদীপথে নৌকায় করে কাওয়াকোলা যাবার সময় বজ্রপাতে একজন নিহত ও দুইজন আহত হয়। নিহত ব্যক্তি শহরের ধানবান্ধি এলাকার দরবেশ মুন্সির ছেলৈ আব্দুর রাজ্জাক মুন্সি (৪৫)। এছাড়া সয়দাবাদ ইউনিয়নের চলমান রেল সেতু প্রকল্পে কাজ করার সময় মো. নাসির (১৭) নামে একজন রেলশ্রমিক নিহত হন।

সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি জানান, বিলে মাছ ধরতে গিয়ে জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বজ্রপাতে শাকিল মিয়া নামে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকালে উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের শুয়াকৈর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

শাকিল শুয়াকৈর গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেনের ছেলে। সে একই গ্রামের জমশের আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

কামরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে বৃষ্টির মধ্যে বাড়ির পাশে বিলে মাছ ধরতে যায় শাকিল। এ সময় বজ্রপাত হলে সে বিলের পানিতে পড়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে সরিষাবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্মরত চিকিৎসক মেহেদী হাসান মৃত ঘোষণাকরেন।

নাটোর প্রতিনিধি জানান, বজ্রপাতে আতাউর রহমান (৫২) নামে এক কলেজ শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে সদর উপজেলার কাফুরিয়া পাইকপাড়া গ্রামে এই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। নিহত আতাউর রহমান পাইকপাড়া গ্রামের হালিম সরকারের ছেলে এবং বাগাতিপাড়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুর পৌনে একটার দিকে বৃষ্টির ভাব দেখে শিক্ষক আতাউর রহমান তার নিজ বাড়ির ছাদে শুকাতে দেওয়া ধান তুলতে যান। এ সময় বজ্রপাত হলে তিনি ওই ভবনের পাশের নিচু একটি ঘরের ছাদের ওপর ছিটকে পড়েন। বাড়ির লোকজন সহ প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বাঁশবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সাবিহা খাতুন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ