নিস্তব্ধ নয়াপল্টন!

এক রাত পার হতেই পাল্টে গেছে নয়াপল্টনের চিত্র। গতকাল সন্ধ্যায় (৭ ডিসেম্বর) যে এলাকা ছিল রণক্ষেত্র, সেখানে আজ নিস্তব্ধতা। আজ সন্ধ্যার পর থেকে যেন নয়াপল্ট‌নে এক ‘ভুতুড়ে’ পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা গেছে, নয়াপল্ট‌নে বিএন‌পির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলছে। আশপা‌শে অসংখ্য পু‌লিশ এবং সাদা পোশা‌কের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আর ছিল কিছুসংখ্যক গণমাধ্যমকর্মীর উপস্থিতি। তবে সন্ধ্যা ৬টার দি‌কে প্রথ‌মে যুবলীগ, এরপর ছাত্রলীগ কর্মীদের মিছিল নিয়ে নয়াপল্টন এলাকা দি‌য়ে কাকরাইলের দি‌কে যেতে দেখা গেছে।

এর আগে, বুধবার বিএনপির কার্যালয়ে পুলিশি অভিযানে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া নেতাকর্মীরা বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নাইটিঙ্গেল মোড়ে পুলিশ ব্যারিকেডের সামনে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ বারবার তাদের সরিয়ে দিলেও দিন গড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। বিকেল ৪টার দিকে তারা আবার জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকলে পুলিশ তাদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর বুধবার রাত থেকে এই এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত রয়েছে। বিএনপি কার্যালয় এলাকাকে ‘ক্রাইম জোন’ ঘোষণা করে হলুদ ফিতা টানিয়ে দিয়েছে পুলিশ। বিজয়নগর, ফকিরাপুল মোড় ও নাইটিংগেল মোড়ে পুলিশ ব্যারিকেড বসালেও আজ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে তুলে নেয়। পুরো এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

এদিন সকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বিএনপি কার্যালয়ে যেতে বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় ফখরুল বলেন, ‘আমি দলের মহাসচিব। আমাকে আমার দলীয় কার্যালয়ে যেতে দেয়নি পুলিশ। তারাই আমাদের অফিসে বোমা নিয়ে রেখেছে। তারাই বিএনপির ১০ তারিখের শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে পুরোপুরি নস্যাৎ করার জন্য পরিকল্পনা করেছে।’

মির্জা ফখরুলকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেতে না দেওয়ার বিষয়ে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের ক্রাইম সিনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে যেতে দেওয়া হবে না। পুলিশের ওপর বিএনপি অফিস থেকে বোমা মারা হয়েছে। আমরা সেই জায়গাটি ‘প্লেস অব অকারেন্স’ হিসেবে বিবেচনা করছি। সিআইডি ক্রাইম সিন নিয়ে কাজ করছে। কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেখানে কাউকে যেতে দেওয়া হবে না।’

এদিকে রাজধানীর রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘বিএনপি যদি এখনও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চায়, তাহলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।’

মন্ত্রী বলেন, ‘তবে বিএনপিকে সমাবেশ করতে হলে অবশ্যই ডিএমপি কমিশনার নির্ধারিত স্থানে সমাবেশ করতে হবে। আর তারা বিকল্প স্থান চাইলে কালশী (মিরপুর) মাঠে করতে পারে। সেখানে পুলিশ তাদের সহায়তা করবে।’

এদিকে আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা শহর, শহরতলী এবং আন্তঃজেলা রুটে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক থাকবে বলে জানিয়েছে পরিবহন মালিক সমিতি। ঢাকার বিভিন্ন পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দের এক যৌথসভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ