ইউক্রেন যুদ্ধে ভারসাম্যমূলক একটি অবস্থান বজায় রেখেছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো।
২৪ ফেব্রুয়ারি বেলারুশে জড়ো হওয়া রুশ সেনারা ইউক্রেনের সীমানায় ঢুকে পরে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ শুরু করতে বেলারুশকে ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধে সরাসরি যুক্ত হয়নি বেলারুশ, নিজেদের সেনাদের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠায়নি তারা। তবে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, এই যুদ্ধকে টেনে আনা হয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বেলারুশের লুকাশেঙ্কোর সাক্ষাতের পর শঙ্কা তৈরি হয়েছে তিনি যুদ্ধে জড়িত হচ্ছেন। লুকাশেঙ্কো বলেছেন, বেলারুশ ও রাশিয়ার সেনাবাহিনীর যৌথ দলকে মোতায়েন করা হবে। তিনি জানিয়েছেন, প্রশিক্ষণের জন্য কয়েকদিনের মধ্যে বেলারুশে কয়েক হাজার রুশ সেনা আসবে।
বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, দুই দেশের যৌথ সেনাবাহিনী মোতায়েনের কারণ শুধুই রক্ষণাত্মক।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কি মঙ্গলবার জি-৭ জোটের বৈঠকে বলেছেন, লুকাশেঙ্কোকে উস্কানিমূলক কার্যক্রম শুরু করা ঠেকাতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের বেলারুশ-ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েন করা হোক।
এসব সত্ত্বেও সন্দেহ আছে বেলারুশ এই যুদ্ধে জড়িত হবে। এমনকি যদি পুতিনের কাছ থেকে লুকাশেঙ্কোর ওপর চাপ থাকেও।
বেলারুশের একজন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, অবশ্যই উদ্দেশ্যসাধনে পুতিনের অনেক উপায় আছে। কিন্তু লুকাশেঙ্কোকে আত্মঘাতীমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বাধ্য করতে পারবেন না তিনি। আমি তাই মনে করি লুকাশেঙ্কো যুদ্ধে জড়িত না হতে সব ধরনের চেষ্টা করবে।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু অন্যদিকে, এক্ষেত্রে লুকাশেঙ্কো স্থায়ীভাবে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পারবেন না। রাশিয়া উস্কানিমূলক এমন কিছু করবে এতে লুকাশেঙ্কো যুদ্ধে জড়িত হতে বাধ্য হবেন।
হাজুন প্রজেক্ট নামে একটি অধিকার সংস্থা বলেছে, রাশিয়া-ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর যৌথ প্রশিক্ষণ ইয়েলস্ক শহরের মিউনিসিপ্যাল ভভনে হতে পারে। যা ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
সংস্থাটি বলেছে, স্থানীয় একটি পুলিশ স্টেশন এবং প্রশাসনিক ভবনের কাছে অবস্থিত একটি গানের স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাছাড়া বুধবার সেনাদের একটি বহর আসছে, সেই বহরের কোনো ছবি বা ভিডিও না করতে স্থানীয়দের বলা হয়েছে।
কোনার্ড মুজাইকা নামে একজন সামরিক বিশ্লেষক বলেছেন, বেলারুশের সেনাবাহিনীর কার্যক্রমের ওপর অল্প কয়েকটি নজরদারি প্রতিষ্ঠান নজর রাখে। কারণ বেলারুশের সেনাবাহিনী দুর্বল। লুকাশেঙ্কোর বাগাড়পূর্ণ উক্তি ছাড়া (বেলারুশের সেনাবাহিনীর) আর কিছুই নেই।
তিনি জানিয়েছেন, বেলারুশকে পূর্ণ শক্তি সঞ্চার করতে ২০ হাজার সেনাকে জড়ো করতে হবে। আর বেলারুশ যদি ইউক্রেন সীমান্তে সেনা জড়ো করা শুরু করে তাহলে তাদের সতর্কতা দিতে অনেক সময় পাওয়া যাবে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান