ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী চক্র ব্যাপক সক্রিয় হয়ে উঠেছে- এ তথ্য পেয়ে পৃথক অভিযান চালিয়ে চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী চক্রের ৪১ সদস্যকে আটক করেছে র্যাব।
আটকরা হলো- সোলাইমান (২৫), নুর হোসেন (৩০), মো. শাহজালাল (২২), আলী হোসেন (৪০), আরিফ হোসেন (১৭), সাইফুল ইসলাম (৫৭), মাসুম (২৭), মো. শিবলু (২৫), মোক্তার হোসেন (৩০), মো. মুন্না (২০), মো. সাইমন (৩২), মো. রনি (২৫), মো. আবদুল মান্নান (৪৪), মো. বাবুল হাওলাদার (৫০), মো. আবুল কাশেম (৪৫), নুরুল হক (৪০), মো. রাকিব খান (২০), মো. মাসুদ (৪০), মো. জনি (৩২), মো. আকাশ (২০), মো. নাইম (১৯), মাজাহারুল ইসলাম ওরফে তামিম (১৮), মো. রাকিব (১৯), মো. নাইম বেপারী (১৯), মো. সজীব (২৫), বাবুল হোসেন (৩২), ইসমাঈল (৩৫), মো. রবিন (২৮), মো. সেলিম (৪০), মো. ইয়াসিন আরাফাত (২২), মো. নুর হোসেন (৬৫), মহব্বত হোসেন (৪০), মো. লিটন (৪২), মো. আরিফ (২৫), সাব্বির হোসেন জুবায়ের (২০), হেমায়েত হোসেন মামুন (৩৮), মো. ফারুক (৫০), শাহ পরান (২৬), কামরুল হাসান (২৫), মো. মিজান (২৪) ও মো. সেলিম (৩৬)।
তাদের আটকের পর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরতে শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে আসেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিইও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজধানীর সবুজবাগ, খিলগাঁও, হাতিরঝিল, তেজগাঁও, মুগদা, শাহবাগ, মতিঝিল, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর ও পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ ৪১ জনকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে ৩৩ জন চাঁদাবাজ ও ৮ জন ছিনতাইকারী। এ সময় তাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির মাধ্যমে আদায়কৃত নগদ ১ লাখ ২ হাজার ৫৩৩ টাকা, মোবাইল ৫৩টি, ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত ৯টি সুইচ গিয়ার, ১০টি অ্যান্টিকাটার, ১০টি ক্ষুর, ৭টি চাকু, ২টি চাইনিজ কুড়াল ও ৪টি রামদা উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, চাঁদাবাজ চক্র রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সবজি ও ফলের দোকান, ফুটপাতের অস্থায়ী দোকান, লেগুনা স্ট্যান্ড এবং মালবাহী গাড়ি থেকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করে আসছে। কেউ চাঁদা দিতে রাজি না হলে তারা জীবননাশের হুমকি প্রদর্শন করে। এ ছাড়া ঈদের কেনাকাটার জন্য বের হওয়া সাধারণ মানুষের সর্বস্ব ছিনিয়ে নিত চক্রের সদস্যরা।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সবজি ও ফলের দোকান, ফুটপাতের অস্থায়ী দোকান, লেগুনা স্ট্যান্ড এবং পরে পণ্যবাহী গাড়ি থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করে আসছিল। ফুটপাতের দোকানদারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করত। এই কাজে ৪ থেকে ৫ জনের একটি গ্রুপ জড়িত।
তিনি জানান, ঈদ সামনে রেখে ছিনতাই চক্রের সদস্যরাও সক্রিয় রয়েছে। তারা পথচারী, রিকশাআরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি অটোরিকশার যাত্রীদের ধারাল অস্ত্র প্রদর্শন করে সর্বস্ব লুটে নিত। ইফতারের সময় এবং সেহরির পর তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের প্রাণঘাতী আঘাত করতে দ্বিধাবোধ করে না।
‘খিলগাঁও, মালিবাগ রেলগেট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গির মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালভার্ট রোড, নাসিরের টেক হাতিরঝিল, শাহবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং পল্টন মোড়, গোলাপ শাহর মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আব্দুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা থেকে ভোররাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি পরিলক্ষিত হয়’, জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।