জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের জায়গা থেকে জুলাই সনদের অর্ডার ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দিতে হবে। জুলাই সনদে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বলে কিছু থাকবে না। যা ঐক্যমত হয়েছে, বাকিটা জনগণ ঠিক করবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির মাধ্যমে আমরা নির্বাচনের দিকে যাব।’
গণঅভ্যুত্থানের অংশীদারদের সংসদে থাকা উচিত মন্তব্য করে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আগামী সংসদে সংবিধান সংস্কার হবে। নতুন সংবিধানের জন্য কাজ করা হবে। গণঅভ্যুত্থানের অংশীজনদের সকলের সংসদে থাকা উচিত।’
শুক্রবার দুপুরে বাংলা একাডেমীর কবি শামসুর রহমান মিলনায়তনে ইউনিভার্সিটি টিচার্স ফোরাম নামে নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাহিদ এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ইউনিভার্সিটি টিচার্স ফোরামের ৫৬ সদস্যের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ পরিবর্তনের জন্য মুখিয়ে আছে। পরিবর্তন ছাড়া অভ্যুত্থান, নির্বাচন, ঐক্যমত্য কমিশন সবই ব্যর্থ হবে। অভ্যুত্থানের সুফল যদি প্রত্যেক মানুষ না পায়, কেবল রাজনৈতিক দল, কিছু মুষ্টিমেয় ব্যক্তি পায়, তাহলে এটা কোনো পরিবর্তন হলো না। জনগণ আবার রাস্তায় নামবে।’
শিক্ষা নিয়ে কমিশন হয়নি মন্তব্য করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী কাঠামো এখনো রয়ে গেছে। শিক্ষা নিয়ে কোনো কমিশন হয়নি। কিন্তু অন্য যে কমিশন হয়েছে, তা নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। মাত্র ছয়টি কমিশন, যেগুলো সাথে নির্বাচন ও রাজনীতি সম্পর্কিত; সেগুলো নিয়েই সবার আগ্রহ। আলোচনাকে আমরা এর বাইরে আনতে পারিনি। এখন সেই আলোচনায়ও ঐক্যমত্যে পৌঁছানো যাচ্ছে না।’
নাহিদ আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের একটা প্রেক্ষাপট ছিল অর্থনৈতিক সংকট; বিশেষত তরুণরা সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী ছিল। আমাদের সামনে দুইটা অপশন ছিল, সরকারি চাকরি বা বিদেশে যেতে হবে। কিন্তু এই সরকারি চাকরিতেও কোটা বড় বাধা হয়ে দাঁড়ালো।’
তিনি বলেন, ‘এখন নির্বাচন আসছে, অনেক রাজনৈতিক দল কোটি চাকরির ব্যবস্থা করার কথা বলছেন। তরুণরা কেউ আর বেকার থাকবে না। কিন্তু এই কথাগুলো যখন আমরা বলি, আমরা যেন বাস্তবিকভাবেই বলি। আমরা কোন প্রক্রিয়ায় কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করব, কোন প্রক্রিয়ায় তরুণদের ক্ষমতায়িত করব, এটার প্রস্তাবনা কেউ হাজির করতে পারছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ২৪ দফার ইশতেহারে শিক্ষা নিয়ে অঙ্গীকার করেছি। তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য বিনিয়োগ, উদ্যোক্তা তৈরি ও চাকরি সবই লাগবে, কিন্তু গড়ায় হাত দিতে হলে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় হাত দিতে হবে।’
ইউনিভার্সিটি টিচার্স ফোরামের কমিটিতে আহ্বায়ক হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম, সদস্য সচিব হিসেবে হয়েছেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ড. শামীম হামিদী এবং প্রধান সংগঠক হয়েছেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কবীর উদ্দিন। এনসিপির কয়েকজন নেতাও কমিটিতে আছেন। সংগঠনটি বলেছে, এটি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত না হলেও প্রবলভাবে রাজনীতি সচেতন হিসেবে কাজ করবে।