নির্বাচন যেন সঠিক সময়ে না হয় সেই চেষ্টা করছে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল। এ অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করে আমরা একটা জায়গায় আসার চেষ্টা করছি যে, একটা নির্বাচন যেন করা যায়। আমি কোনো দলকে দোষারোপ করতে চাই না, কোনো ব্যক্তিগত দোষারোপ করতে চাই না। কিন্তু হতাশার সঙ্গে লক্ষ্য করি যে, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন যেন পিছিয়ে যায়, নির্বাচন যেন সঠিক সময় না হয় তার চেষ্টা করছে। এটা ঠিক হচ্ছে না।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে একটি গ্রন্থ প্রকাশনার আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তনে বিএনপির উপ-প্রকাশনা কমিটির প্রকাশনায় ‘মহাকালের মহানায়ক শহীদ জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভা হয়।
এখন দ্রুত একটা রাজনৈতিক সরকার দরকার উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দ্রুত নির্বাচনের মধ্যমে একটি রাজনৈতিক সরকার দেশের দায়িত্ব না নিলে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা সবকিছুই আরও কঠিন পরিস্থিতিতে পড়বে। আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই যে, জাতীয় সংস্কার কমিশন তারা অতি অল্প সময়ের মধ্যে অন্তত কিছু সংস্কারের কাজ শেষ করতে পেরেছেন। এটার প্রয়োজন ছিল পরিবর্তনের পরে।’
সংস্কার সব বিএনপির হাত ধরেই
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারেক রহমান ২০২২ সালে যে ৩১ দফা দিয়েছিলেন তারই ধারাবাহিকতায় কিন্তু আমরা এই সংস্কারগুলো দিয়েছি। বেগম খালেদা জিয়া দিয়েছিলেন ২০১৬ সালে ভিশন-২০৩০, আর জিয়াউর রহমান দিয়েছিলেন ১৯ দফা কর্মসূচি। সব কিছু মিলিয়ে এসব সংস্কার। বিএনপির জন্ম তো সংস্কারের মধ্যে, সংস্কারের মধ্য দিয়েই একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রেসিডেন্ট জিয়া নিয়ে এসেছিলেন।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফ্রিডম অফ প্রেস প্রেসিডেন্ট জিয়া দিয়েছিলেন, জনগণের মৌলিক স্বাধীনতার অধিকারগুলোর স্বাধীনতা তিনি দিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া প্রেসিডেন্সিয়াল ফর্ম অফ গভর্নমেন্ট থেকে পার্লামেন্টারি গভর্নমেন্ট নিয়ে এসেছিলেন, মেয়েদের দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিনা খরচে লেখাপড়ার ব্যবস্থা করেছিলেন, মেয়েদের চাকরি দেওয়া, মহিলা অধিদপ্তর করা- এসব সব তো বিএনপি ও খালেদা জিয়ার দেওয়া। অথচ এমনভাবে কথা বলা হয় যে, বিএনপি একটা ভিলেন, কিছু কিছু লোক বলার চেষ্টা করেন আমি বিস্মিত হই। আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, বাংলাদেশে যা কিছু ভালো হয়েছে সব বিএনপির হাত দিয়ে হয়েছে, খালেদা জিয়ার হাত দিয়ে হয়েছে।
জিয়ার নাম মুছে ফেলতে পারেনি
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়ার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল আওয়ামী লীগ। জিয়ার মাজার পর্যন্ত তুলে নিয়ে যাবে, তার নাম-গন্ধ থাকবে না। পারে নাই। কারণ সত্যিকার অর্থেই জিয়াউর রহমান ক্ষণজন্মা। আল্লাহ যাকে পাঠিয়েছেন মানুষের কল্যাণের জন্য। তাকে কি এত সহজেই ছুড়ে ফেলা যায়? যায় না।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও প্রকাশনা উপকমিটির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশররফ হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল হাই শিকদার, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর পাভেল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, জাসাসের সাবেক সভাপতি রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী, কলামিস্ট সাখাওয়াত হোসেন সায়ান্থ, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত বক্তব্য রাখেন।