দুই শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪

রাজশাহীতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে দুই নির্মাণ শ্রমিককে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় এ মামলা করেছেন নিহত এক শ্রমিকের স্ত্রী। এদিকে, ওই ঘটনায় আটক চারজনকে শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে, বৃহস্পতিবার নগরীর সপুরা এলাকার এক বাড়িতে দুই শ্রমিককে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়। এতে ওই শ্রমিকদের মৃত্যু হয়।

নিহত দুই শ্রমিক হলেন- নওগাঁর মান্দা উপজেলার মগনিয়া গ্রামের আবদুস সামাদের ছেলে মো. আতাউর (৪৫) এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৈতান্নপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে রাকিবুল ইসলাম রাজু (৩৫)। রাকিবুল নগরীর তেরোখাদিয়া ডাবতলা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।

গ্রেপ্তার চারজন হলেন- নগরীর সপুরা বিসিকের মডার্ণ ফুডের মালিক মো. আব্দুল্লাহ (৩৮), আব্দুল্লাহর শ্বশুর মাসুম রেজা (৫০), চাচাতো শ্যালক মঈন উদ্দিন রিয়াল (১৯) এবং কর্মচারী মো. ইমরান (২১)।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সপুরা এলাকায় আব্দুল্লাহর বাড়িতে কাজে যান দুই নির্মাণ শ্রমিক। এদিন ওই বাড়ি থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা চুরির অভিযোগে দুজনকে বেঁধে ফেলা হয়। এরপর দুপুর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দফায় দফায় তাদের ওপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। হাত ও পায়ের নখ উপড়ে ফেলে তাদের কাছ থেকে টাকা চুরির স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু দুই শ্রমিক নির্যাতনের পরেও টাকা চুরির স্বীকারোক্তি দেননি।

রাত ৯টার দিকে বোয়ালিয়া থানা-পুলিশ দুই শ্রমিককে বর্বর নির্যাতনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। এরপর গুরুতর অবস্থায় দুই শ্রমিককে উদ্ধার করে পুলিশের গাড়িতে করেই দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় জরুরি বিভাগেই কর্তব্যরত চিকিৎসক আতাউরকে মৃত ঘোষণা করেন। আর রাকিবুলকে পাঠানো হয় ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তিনিও মারা যান। এ ঘটনায় রাত সাড়ে ১২টায় নিহত রাকিবুলের স্ত্রী সোমা খাতুন বাদী হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে নিহত দুই শ্রমিকের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। পরে মরদেহ দুটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দুজনকে নির্যাতনের সঙ্গে আরও যারা জড়িত, তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ