আমি বিজয় দেখেছি

১৯৯৭ সালের ১৯ আগস্ট ইতালিতে আসার পর একজন রাজনৈতিক নেতা এবং সামাজিক ব্যক্তিত্ব জি এম কিবরিয়ার সাথে আমার পরিচয় ঘটে। তার পুরো নাম গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া।রাজধানীর রোমে একজন বড় ব্যবসায়ী হিসেবেও তার পরিচিতি ছিল। ব্যাপক জনপ্রিয় নেতা তিনি। তার ডাকে ইমিগ্রেশন আন্দোলনে হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশীকে রাজপথে দেখেছি। ১৯৯৮ বাংলাদেশ সমিতি, ইতালির নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক প্রচারণা চলছে। ওই সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অস্তিত্ব ছিল না। ফলে লিফলেট এবং সংবাদপত্রের উপরেই নির্ভর করে প্রচারণা চলছে।বাংলাদেশ সমিতির নির্বাচনে রোম ছাড়াও ইতালির বিভিন্ন প্রদেশ থেকে শত শত নেতাকর্মী এসে ভোট দিয়েছেন। প্রত্যক্ষ ভোটে আবারো সভাপতি নির্বাচিত হলেন জি এম কিবরিয়া। বিজয় হল তার।শুনেছি, ১৯৮৮ সাল থেকে জনাব কিবরিয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ইতালি শাখার সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই থেকে তার শুরু। বাংলাদেশ থেকে রাজনীতি করে আসা এই নেতা বঙ্গবন্ধু এবং তার আদর্শ নেই চলেছেন প্রবাসেও। সংগঠিত করেছেন ইটালি আওয়ামীলীগকে। মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব হোসেনকে সভাপতি এবং হেনরী ঠিক কস্তাকে সাধারণ সম্পাদক করে শুরু হল ইতালি আওয়ামী লীগের যাত্রা।পরবর্তী সম্মেলনে প্রস্তুতি কমিটির তিনি। প্রত্যক্ষ ভোটের আয়োজন করা হলো ‌ সেই নির্বাচনেও বিজয়ী হলেন মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব হোসেন। তিনি দীর্ঘ সময় দল পরিচালনা করেছেন। ২০১২, আবারো গঠিত হলো সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি। আহবায়ক জিএম কিবরিয়া। ব্যাপক আয়োজনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিজয়ী হলেন তিনি নিজেই। সফল সম্মেলনের মাধ্যমে জনাব কিবরিয়া নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হাতে দায়িত্ব তুলে দিলেন।ওই কমিটির মেয়াদ ছিল তিন বছর। কিন্তু দশ বছর অতিক্রান্ত হবার পর ইতালি আওয়ামীলীগের নির্বাহী কমিটি আবারও দায়িত্ব দিলেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়কের। জিএম কিবরিয়া হলেন আহ্বায়ক, সদস্য সচিব নির্বাচন করা হলো আবু সাঈদ খানকে। এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলেন কে এম লোকমান হোসেন। নির্বাহী কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে এই কমিটি গঠিত হয়। আবারো সম্মেলনের আয়োজন। বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হলো। জিএম কিবরিয়ার নেতৃত্বে কাউন্সিলরগণ মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হলো সভাপতির। এই সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেন আলমগীর হোসেন।
তবে, ইতালি আওয়ামী লীগের একটি অংশ সম্মেলনে যোগদান থেকে বিরত থাকেন। প্রধানমন্ত্রী এবং দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা সম্মেলনের সফলতা কামনা করে বাণী প্রদান করেছিলেন ‌
পরবর্তীতে অপর অংশ আরেকটি সম্মেলনের আয়োজন করে। পুরো বিষয়টি দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকে। এখানে জিএম কিবরিয়া এবং তার সহধর্মিনী সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা হোসনে আরা বেগম দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ পেতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ২০ অক্টোবর গণভবনে অনুষ্ঠিত হয় ইটালি আওয়ামীলীগের সাথে দলীয় প্রধানের আনুষ্ঠানিক বৈঠক। ওই বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব হোসেন সভাপতি এবং আলমগীর হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, “তোমরা ছিলে আমার দুর্দিনের কর্মী। একটি সম্মেলনের মাধ্যমে তোমরা যাদেরকে নির্বাচিত করেছ, মাহতাব সভাপতি এবং আলমগীর সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ইতালি আওয়ামী লীগ পরিচালনা করবে”
উল্লসিত হন নেতারা।
ওই বৈঠকে জিএম কিবরিয়া ছাড়াও সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি কে এমন লোকমান হোসেন, ইতালি আওয়ামীলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব আবু সাঈদ খান, সাবেক সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম মাঝি এবং বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন। অসুস্থতার কারণে ওই দিন মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব হোসেন বৈঠকে অংশ নিতে পারেননি। হলে আবারও দলীয় নেত্রীর দ্বারস্থ হলেন তারা। এবারে জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদ নেত্রীর কার্যালয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেলেন।
এখানেও জিএম কিবরিয়া, হোসনে আরা বেগম, মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব হোসেন এবং আলমগীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কিছুক্ষণ আলোচনার পর দলীয় প্রধান মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব হোসেনকে সভাপতি এবং আলমগীর হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ইতালি আওয়ামী লীগের দায়িত্ব দিয়ে স্বাক্ষর করেন। এবারও জিএম কিবরিয়ার বিজয়া হল।
সমাজনীতি এবং রাজনীতিতে সফল এই ব্যক্তিটি ব্যবসার ক্ষেত্রেও সফলতা অর্জন করেছেন। তিনি বাংলাদেশে গড়ে তুলেছেন এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। যার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এই জি এম কিবরিয়া।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ