নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ফের গোলাগুলি, সরানো হলো দেড়শ পরিবার

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা সীমান্তে ফের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর ছেড়ারমাঠ সীমান্ত এলাকার দেড় শতাধিক পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

শনিবার বিকালে হঠাৎ করে সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি বেড়ে যায়। মর্টারশেল এবং গুলির বিকট শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সীমান্তের পাশে বসবাস করা সাধারণ মানুষের মধ্যে।

এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরুল আবছার জানান, শনিবার সকালে ফের হঠাৎ করেই গুলির শব্দ শোনা যায় চাকঢালা ও দৌছড়ি সীমান্তের ওপারে। কিন্ত বিকালের দিকে চাকঢালা সীমান্তের ৪৩ ও ৪৪ নাম্বার সীমান্ত পিলারের ছেড়ারমাঠ এলাকায় গোলাগুলির পরিমাণ বেড়ে যায়। সীমান্তের ওপারে বিকট শব্দে মর্টারশেল এবং গুলি বর্ষণের আওয়াজ শোনা যায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আতঙ্কিত সীমান্ত অধিবাসী দেড়শ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে অধিকাংশকে পাশ্ববর্তী সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে এবং ১২টি পরিবারের নারীদের ছেড়ারমাঠ এলাকার এক ইউপি সদস্যের বাড়িতে রাখা হয়েছে। সীমান্তবর্তী অধিবাসীদের দ্রুত সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বলেছেন, সীমান্তে অবস্থানকালে মনে হচ্ছিল গুলিগুলো যেন মাথার উপর দিয়েই যাচ্ছে। সন্ধ্যার পরও সীমান্তে গোলাগুলি হচ্ছে বলে খবর পেয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সালমা ফেরদৌসের নাম্বারে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ করেননি তিনি৷

বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবির দায়িত্বশীলদের সাথেও যোগাযোগের চেষ্টো করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

গোলাগুলির ঘটনা সম্পর্কে দৌছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এমরান বলেছেন, শনিবার সকালে দৌছড়ি সীমান্তের ওপারেও গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। তবে দুপুরের পর দৌছড়ি সীমান্তে আর গোলাগুলি হয়নি। দৌছড়ি সীমান্ত থেকে কোনো অধিবাসীকে সরানো হয়নি।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, রেজু, আমতলী, ফাত্রাঝিরি, হেডম্যানপাড়া এবং দৌছড়ি ও সদর ইউনিয়নের সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সেদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মী (এএ) সশস্ত্র সংগঠনের সাথে মিয়ানমার বাহিনীর দুমাস ধরে সংঘাত চলছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে মিয়ানমার বাহিনীর ব্যবহৃত যুদ্ধ বিমান এবং ফাইটিং হেলিকপ্টার থেকে নিক্ষেপ করা গোলা এসে পড়েছে বাংলাদেশ সীমান্তে। মাঝে মধ্যেই মর্টারশেলের গোলা এবং ভারী অস্ত্রেও গুলি এসে পড়েছে ঘুমধুম সীমান্তে। ১৬ সেপ্টেম্বর সীমান্তের ওপার থেকে আসা মর্টারশেলের গোলা বিস্ফোরিত হয়ে শূন্যরেখায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ