‘ইউক্রেন থেকেই শুরু হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হতে পারে এবং এর ফলে সভ্যতা হয়তো টিকে থাকবে না বলে সতর্ক করেছেন মার্কিন ধনকুবের ও ব্যবসায়ী জর্জ সোরোস। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের একটি প্যানেলে বার্ষিক বক্তব্যে জর্জ সোরোস বলেন, যুদ্ধ খুব দ্রুত শেষ করতে বিশ্বকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সভ্যতা রক্ষার সবচেয়ে সেরা এবং একমাত্র উপায় হলো পুতিনকে যত দ্রুত সম্ভব পরাজিত করা।

তিনি বলেন, এই আগ্রাসনই হয়তো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা এবং আমাদের সভ্যতা হয়তো এই যুদ্ধে টিকতে পারবে না।

এদিকে, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে ইউক্রেন নিয়ে প্যানেল আলোচনায় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, একবার প্রেসিডেন্ট (পুতিন) তার এই বিকল্প বাস্তবতার বুদ্বুদ থেকে বের হয়ে বাস্তব জগতে এসে আমাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য প্রস্তুত হলে, বুঝবেন যে বেসামরিক লোকসহ প্রচুর মানুষ নিহত হচ্ছে। সম্ভবত তখন হয়তো তিনি বুঝবেন যে আমাদের কথা বলা শুরু করা উচিত এবং যে যুদ্ধ তিনি শুরু করেছেন তা বন্ধ হওয়া উচিত।

এ সময় জেলেনস্কি অভিযোগ করে বলেন, ইউক্রেনকে সহায়তা করা নিয়ে বিভক্ত হয়ে গেছে পশ্চিমা দেশগুলো।

তিনি বলেন, একতা হলো অস্ত্র নিয়ে। আমার প্রশ্ন হলো, এই একতা কি বাস্তবে আছে? আমি এটি দেখতে পাচ্ছি না। যখন আমরা সত্যিই এক হতে পারব তখনই রাশিয়ার ওপর সুবিধা পাব।

ভিডিও কলে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে ইউক্রেন নিয়ে প্যানেল আলোচনায় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সামরিক জোট ন্যাটোতে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের সদস্য হওয়া নিয়ে যে ঐক্যমতের অভাব রয়েছে সেটিও তুলে ধরেছেন।

তুরস্ক ন্যাটোর অন্যতম শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য যে ফিনল্যান্ড-সুইডেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার বিষয়টি আটকানোর চেষ্টা করছে। এমনকি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিস্যেপ তাইয়্যেপ এরদোগান সরাসরি বলেছেন, তিনি ফিনল্যান্ড-সুইডেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার আবেদনে ভেটো দেবেন।

ফিনল্যান্ড-সুইডেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রেও যে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে দ্বিমত আছে সেটি তুলে ধরেছেন জেলেনস্কি।

এর আগে পুতিন বলেছিলেন, রাশিয়ান ভাষাভাষীদের ‘নব্য-নাৎসিদের’ হাতে গণহত্যা থেকে রক্ষা করার জন্যই মস্কোর এই আক্রমণ শুরু হয়। যদিও এই বক্তব্যের পক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

যদিও ইউক্রেনের একটি চরম ডানপন্থী ব্যাটেলিয়ন রয়েছে। রুশ আক্রমণ প্রতিরোধে ওই ব্যাটেলিয়ন ভূমিকাও পালন করছে। সেটাকেই হয়তো পুতিন যুদ্ধের অজুহাত হিসেবে কাজে লাগিয়েছেন। আক্রমণ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর পুতিন কিয়েভের নেতাদের ‘মাদক আসক্ত এবং নব্য-নাৎসিদের দল’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন, যদিও জেলেনস্কি ইহুদি।

এর আগে মার্চ মাসে মার্কিন গোয়েন্দারা মূল্যায়ন করেছিলেন যে যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার প্রাথমিক ব্যর্থতাসহ পুতিনের উপদেষ্টারা তাকে যুদ্ধের পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিকভাবে অবহিত করছেন না।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ