রোম সফর কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাগরিক সংবর্ধনায় এই দুই নেতা মাহতাব- আলমগীর যথাক্রমে সভাপতিত্ব করেন
এবং নাগরিক সংবর্ধনা পরিচালনা করেন। ইতালির রাজধানী রোমসহ পুরো ইতালি এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে দেড়
হাজারেরও বেশি নেতা কর্মী এই নাগরিক সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন । প্রধানমন্ত্রী যখন মঞ্চে বসা, তখন ইতালি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
আলমগীর হোসেন মঞ্চে মাইকের সামনে দাঁড়ান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার বক্তব্য রাখার আমন্ত্রণ জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসী বাংলাদেশীদের বেশ কিছু দাবি পূরণ করেন। ঘোষণা দেন রোম-ঢাকা রোম রুটে আবার বিমান চালু করার। তবে তিনি বিমান যাতে
খালি না যায়, সে কথাটিও নাগরিক সংবর্ধনায় মনে করিয়ে দেন প্রবাসীদের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ শেষে
তিনি মঞ্চের চেয়ারে বসেন। এরপর ইটালি আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব হোসেন মঞ্চে গিয়ে মাইকের সামনে দাঁড়ান এবং শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ
সরকার আবারো দরকার-এই স্লোগান দিয়ে নাগরিক সংবর্ধনের কার্যক্রম শেষ বলে ঘোষণা করেন।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্থানের
পরেই মঞ্চে এক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে উল্লাসে মেতে উঠেন সর্বস্তরের নেতা কর্মী। পুরো মঞ্চেই যেন এক উৎসবের স্থানে পরিণত হয়। মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব
হোসেন এবং আলমগীর হোসেনকে নিয়ে নেতাকর্মীদের এই উল্লাস আর বিজয়ের স্লোগান বহুদিন দেখেনি প্রবাসী বাংলাদেশীরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাগরিক সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন সর্বইরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম নজরুল ইসলাম এবং
সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান। কিন্তু ইউরোপের এই দুই শীর্ষ নেতার উপস্থিতি কেউ টের পায়নি। কেউ তাদের নামও উল্লেখ করেননি এই নাগরিক সংবর্ধনায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যেকোনো অনুষ্ঠান দলের জন্য সর্বোচ্চ। আর এ ধরনের অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠান পরিচালনা কিংবা সভাপতি ত্বক করার অর্থই হলো দলীয় প্রধানের প্রকাশ্য স্বীকৃতি। যদিও ইতিপূর্বে ঢাকায় ইটালি আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলমগীর হোসেনকে লিখিতভাবে অনুমোদন দিয়েছিলেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী এই স্বীকৃতির উপর সঙ্গত কারণেই ইতালি আওয়ামীলীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত । দলীয় সূত্র বলছে, কিছুদিনের মধ্যেই ইতালি আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। ধীরে ধীরে গঠন করা হবে প্রদেশ কমিটি গুলো। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাগরিক সংবর্ধনায় একটি অংশের কিছু কর্মী হইচই করে এই অনুষ্ঠানের মর্যাদা ক্ষুন্ন করেছে বলে উল্লেখ করে ইতালি আওয়ামী লীগ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছে। রোমে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়েছে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত এবং দলীয় ব্যবস্থা নেবে দলটি । ওই সাংবাদিক সম্মেলনে ইতালি আওয়ামীলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি
কে এম লোকমান হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম কিবরিয়া, মহিলা সম্পাদিকা হোসনে আরা বেগম, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সাঈদ খান, সহ-সভাপতি হাজী মোঃ জসিম উদ্দিন, আফতাব বেপারী, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ রব মিন্টুসহ বিপুল সংখ্যক দলীয় নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক তার লিখিত বক্তব্যে, নাগরিক সংবর্ধনার ভিডিও ফুটেজ দেখে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে রোম মহানগর আওয়ামীলীগসহ রোমের অংগ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।