ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে ৩৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে উপজেলার ৭২ গ্রাম। সোমবার ভোররাতে কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে পল্লিবিদ্যুতের বিভিন্ন সঞ্চালন লাইনের উপরে ঘরবাড়ি ও গাছের ডালপালা উপড়ে পড়লে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ।
দীর্ঘ ১৮ ঘণ্টা অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে যায় সমগ্র উপজেলা। পরে কিছু কিছু এলাকায় সংযোগ দেওয়া হয়। সোমবার রাত ৭ থেকে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হলেও অধিকাংশ এলাকায় তখনও বিদ্যুৎহীন ছিল। এ নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে বিদ্যুৎগ্রাহকরা।
নাসিরনগর উপজেলায় গ্রাহক সংখ্যা আছে ৬৫ হাজার ২১২ জন। এর মধ্যে আবাসিক ৫৯ হাজার ৮২৫, বাণিজ্যিক ৩ হাজার ৯১৬ জন, শিল্প ৩২৭, সেচ ৩১৪, দাতব্য ৮৩০ জন বিদ্যুৎ গ্রাহক।
তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীদের সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছুটোছুটি করতে দেখা যায়। মঙ্গলবার রাতের মধ্যে ৮০ ভাগ বিদ্যুৎ চালু হবে বলে বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্টদের দাবি।
জানা গেছে, সোমবার ভোররাতে কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সংযোগ সঞ্চালন লাইনের উপর গাছ ও ঘরবাড়ি উপড়ে পড়ে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভলাকুট ইউনিয়নে। বন্ধ হয়ে যায় এসব এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ। সারাদিন চেষ্টার পর রাতে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা গেলেও অধিকাংশ এলাকায় তখনও বিদ্যুৎ ছিল না।
উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা জামাল, খুরশেদ ও আলাল মিয়া জানান, ঝড়তুফানের আগ থেইক্যাই আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নাই। ফ্রিজের মাছ-মাংস নষ্ট হয়ে গেছে। সারাদিন রোজা রাইখ্যা রাতে একটু শান্তিতে ঘুমব সে উপায়ও নাই। এখন আবার লাইনে সমস্যা। কবে যে বিদ্যুৎ আসবে সেটাও জানি না।
নাসিরনগর পল্লিবিদ্যুৎ কার্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ১৮টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে পড়েছে, হেলে পড়েছে ২২টি খুঁটি। আর বৈদ্যুতিক তার নষ্ট হয়েছে প্রায় ১০ কিলোমিটার। মিটার নষ্ট হয়েছে ৪০০টি। পাশের উপজেলা কসবা ও আখাউড়া থেকে ৩০ জন প্রশিক্ষিত লোক এনে কাজ করানো হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে কিছু লোকও কাজ করছেন। সব মিলিয়ে দ্রুত সময়ে উপজেলার সবার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে প্রায় ৬০ জন লোক কাজ করছে।
নাসিরনগর পল্লিবিদ্যুতের জোনাল ম্যানেজার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ঝড়ের পর থেকে আমরা দিনরাত কাজ করছি। কিন্তু গ্রাহকরা বুঝতে চায় না। আশা করছি মঙ্গলবারের মধ্যে অধিকাংশ এলাকায় সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে।