ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা মামলায় স্বামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মামলার অপর তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ফরিদপুরের নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ প্রদীপ কুমার রায় এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন মো. সরোয়ার শেখ (৩৫)। তিনি মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের চুন্নু শেখের একমাত্র সন্তান। সরোয়ার শেখ পেশায় ভ্যানচালক।
খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সরোয়ার শেখের মা ছাহেরা বেগম (৫৫) এবং মামা ওবায়দুল শেখ (৪৫) ও আলিয়ার শেখ (৬০)।
নিহত গৃহবধূ ফরিদা বেগম মধুখালী উপজেলার বাগাট গ্রামের রাশেদ শেখ ও মর্জিনা বেগমের বড় মেয়ে ছিলেন।
২০১৭ সালের ৬ জুলাই ফরিদার লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধারের ১৩ দিন পরে ফরিদার মা মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে মধুখালী থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে তার মেয়ে তাকে মোবাইলে ফোন করে জানান যে, ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য তার স্বামী সরোয়ার শেখ তাকে মারপিট করছে। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি লোক মারফত খবর পান যে, তার মেয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মারা গেছে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনি মেয়েকে জামাইয়ের বাড়ির বারান্দায় শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় তিনি মেয়ের গলায় ফোলা ও কাপড় পেঁচানো দাগ দেখতে পান।
এ ঘটনার পর পুলিশ আলামত জব্দ করে লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় এবং মধুখালী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করে।
এদিকে লাশের ময়নাতদন্তে গৃহবধূ ফরিদাকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যার রিপোর্ট পাওয়া যায়। এ অবস্থায় আদালতে একটি নিয়মিত মামলা রুজু হওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মনিরুজ্জামান ইতোপূর্বে দায়েরকৃত অপমৃত্যু মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন আদালতে।
মামলার পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে নিহতের গলায় চারটি আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাকে গলাটিপে হত্যার কথা উল্লেখ করা হয় এতে। আসামিকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হলো। এছাড়া আসামিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো।