সুখময় জীবন মেলে সুন্দর চরিত্রে

মানুষের স্বভাবজাত ধর্ম ইসলাম। মানব জীবনকে সুখময় করে তুলতে ইসলাম দিয়েছে কালজয়ী ফর্মুলা। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আদি যুগ থেকে এখানে পাঠিয়েছেন নবি ও রাসূল।

সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) পাঠিয়েছেন মানবতার উৎকর্ষের পূর্ণতা প্রদানের জন্য। মহানবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘আমাকে পাঠানো হয়েছে সুন্দর চরিত্রের পূর্ণতা প্রদানের জন্য।’ (মুসলিম ও তিরমিজি)। মানব জীবনের প্রতিটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে আল কুরআন। আল্লাহতায়ালা বলেন, (হে নবি) আমি সব বিষয়ে ব্যাখ্যা করে আপনার প্রতি এ কিতাব নাজিল করেছি। (সূরা নাহল : ৮৯)।

এ ছাড়া অন্যত্র বলেছেন, ‘এই কিতাবে আমি কোনো কিছু বাদ দেইনি। (সূরা আনয়াম : আয়াত ৩৮)। কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে বর্ণিত সুখময় জীবনের নির্দেশনা তথা আদর্শ মানুষের গুণাবলি নিুে তুলে ধরা হলো-

কোমল হৃদয়বান হওয়া : একজন আদর্শ মানুষকে অবশ্যই কোমল হৃদয়ের অধিকারী হতে হবে। কেননা, একজন কোমল স্বভাবের ব্যক্তি স্বভাবগতভাবেই অন্যের দুঃখ-কষ্ট অনুভব করে এবং সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। সাধারণ মানুষ খুব সহজেই তাদের সঙ্গে মিশতে পারে। আর একজন রূঢ় ও কঠোর স্বভাবের মানুষ থেকে দূরে থাকে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যদি আপনি রূঢ় ও কঠোরচিত্ত হতেন, তবে তারা আপনার আশপাশ থেকে সরে পড়ত।’ (আল-ইমরান : আয়াত ১৫৯)।

ক্ষমাশীলতা : আদর্শ মানুষের অন্যতম গুণাবলি হলো ক্ষমাশীলতা। মানুষের ওঠা-বসায়, চাল-চলনে ও কথা-বার্তায় ভুল হওয়া স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে তাকে ক্ষমা করে দেওয়াই হলো আদর্শ মানুষের গুণ। আল্লাহ বলেছেন, ‘অর্থাৎ যে তোমার সঙ্গে অন্যায় করে তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও। (আল-কুরআন)।

পরামর্শ গ্রহণ করা : একজন আদর্শ মানুষের অপরিহার্য গুণ হলো পরামর্শ গ্রহণ করা। ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক যে কোনো মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল কাজে পরিষদের কিংবা জ্ঞানীগুণীদের পরামর্শ গ্রহণ করার মানসিকতা থাকতে হবে। এটি আল্লাহর নির্দেশ। এমনকি রাসূল (সা.)-এর ওপরও এ নির্দেশ ছিল। আল্লাহতায়ালা বলেন, এবং কাজে-কর্মে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করুন। (সূরা তালাক : আয়াত ৩)।

অস্থিরতা পরিহার করা : একজন আদর্শবান মানুষকে অবশ্যই অস্থিরতা পরিহার করতে হবে। চরম বিপর্যয়ের সময়েও ধৈর্যশীল হতে হবে। রাসূল (সা.) বলেন,’ ধীরস্থিরতা আসে আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে, আর তাড়াহুড়ো আসে শয়তানের পক্ষ থেকে। (তিরমিজি)।

সত্যবাদিতা : একজন আদর্শ মানুষের মধ্যে যেসব গুণ থাকা আবশ্যক, তার মধ্যে অন্যতম হলো সত্যবাদিতা। সত্য মুক্তি দেয়, মিথ্যা ধ্বংস করে। আল কুরআনে এসেছে, হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং তোমরা সত্যবাদীদের সঙ্গে থাক। (সূরা তাওবা : আয়াত ১১৯)।

ন্যায়বিচার : একজন আদর্শ মানুষকে অবশ্যই ন্যায়বিচারকের গুণে গুণান্বিত হতে হবে। কেননা, ন্যায়বিচার করা আল্লাহর নির্দেশ। কুরআনে এসেছে, আল্লাহতায়ালা তোমাদের ন্যায়পরায়ণতা ও সদাচরণের নির্দেশ দেন। (সূরা নাহল : আয়াত ৯০)। অন্যত্র বলেছেন, মানুষের প্রতি ন্যায়বিচার করো। (সূরা নিসা : আয়াত ৫৮)।

ধৈর্যশীলতা : একজন আদর্শ মানুষকে অবশ্যই ধৈর্যশীল হতে হবে। কেননা, ধৈর্যশীলতা একটি মহৎ গুণ। আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ! ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। (সূরা বাকারা : আয়াত ১৫৩)।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ