সাত দিনে লবণ চিনিসহ ১৫ পণ্যের দাম বাড়তি

বাজারে নিত্যপণ্যের বাড়তি দামে নাজেহাল ভোক্তা। সাত দিনে লবণ-চিনিসহ ১৫ পণ্যের দাম বেড়েছে।

অন্য পণ্যগুলো হলো-ডাল, আটা, ময়দা, ভোজ্যতেল, আদা, রসুন, শুকনা মরিচ, হলুদ, ছোলা, ধনিয়া, জিরা ও লবঙ্গ। আর এসব পণ্য কিনতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরানবাজার, নয়াবাজার ও শান্তিনগর কাঁচাবাজার ঘুরে এবং ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার পণ্যমূল্য তালিকায়ও তা লক্ষ করা গেছে।

টিসিবি বলছে, সাত দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি চিনির দাম ২ দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি কেজিপ্রতি লবণের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এছাড়া প্রতি কেজি মসুর ডাল ৪ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হয়েছে। কেজিতে আটার দাম বেড়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, ময়দা ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ, ভোজ্যতেল সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ, আদা সর্বোচ্চ ১৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ, রসুন ৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ, শুকনা মরিচ ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ, হলুদ ২ দশমিক ১৭ শতাংশ, ছোলা ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ, ধনিয়া ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ, জিরা ৫ শতাংশ এবং প্রতি কেজি লবঙ্গ ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হয়েছে।

জানতে চাইলে ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। বিভিন্ন কারণ ও অজুহাতে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছে। এতে ভোক্তারা প্রতিনিয়ত অসহায় হয়ে পড়ছেন। তাই পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে সরকারের এখন থেকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি রোধে সংশ্লিষ্টদের জোরালো ভূমিকা দরকার।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ১১৫-১২০ টাকায, যা সাত দিন আগে ১১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ছোট দানার প্রতি কেজি মসুর ডাল বিক্রি হয়েছে ১৩৫ টাকায়, এক সপ্তাহ আগে ১৩০ টাকা ছিল। এছাড়া মাঝারি দানার প্রতি কেজি মসুর ডাল ১২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা আগে ১২০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হয়েছে ৬২-৬৩ টাকায়, যা আগে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্যাকেটজাত আটা প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৬৬ টাকায়, যা সাত দিন আগে ছিল ৬৩ টাকা। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত ময়দা ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা আগে ৭৫ টাকা ছিল। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ১৭৫ টাকায়, যা আগে ছিল ১৭০ টাকা। বোতলজাত সয়াবিন প্রতি লিটার বিক্রি হয়েছে ১৮৫ টাকায়, যা আগে ১৮০ টাকা ছিল। এছাড়া ১০ টাকা বেড়ে প্রতি লিটার পাম অয়েল সুপার বিক্রি হয়েছে ১৪৫ টাকায়।

এছাড়া প্রতি কেজি দেশি আদা ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা সাত দিন আগেও ২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আমদানি করা আদা বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকায়, যা আগে ১৮৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি দেশি রসুন বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা, যা সাত দিন আগে ৯০ টাকা ছিল।

প্রতি কেজি দেশি শুকনা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ২৮০ টাকায় বিক্রি হয়। প্রতি কেজি দেশি হলুদ ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা সাত দিন আগে ২৩০-২৪০ টাকা ছিল।

প্রতি কেজি ধনিয়া বিক্রি হয়েছে ১৬০ টাকা, যা আগে ১৪০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হয়েছে ৫৫০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

রাজধানীর কাওরানবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা জাহিদুল ইসলাম বলেন, বাজারে খাদ্যপণ্যের কোনো সংকট নেই। চাহিদার সবটুকু পাওয়া যাচ্ছে, এরপরও দাম বেশি।

কারণ বাজার তদারকি সংস্থাগুলোর তৎপরতা নেই। আর এ সুযোগে ব্যবসায়ীরা ভোক্তার পকেট কাটছে। আর আমাদের মতো ভোক্তাদের বেশি দামে পণ্য কিনতে নাভিশ্বাস উঠছে।

জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রতিদিন বাজার তদারকি করা হচ্ছে। কোনো অনিয়ম পেলে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। পণ্যের দাম ভোক্তাসহনীয় করতে কাজ চলমান আছে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ