চীনের ‘ভিক্টরি ডে প্যারেড’ নিয়ে নানা ধরণের বিশ্লেষণ করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। শোনা যাচ্ছে, আগামী ৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য কুচকাওয়াজে নতুন অস্ত্র ও প্রযুক্তি সামনে নিয়ে আসবে এশিয়ার পরাশক্তি দেশটি। আয়োজনে অংশ নেবেন ক্ষমতাশালী বহু বিশ্বনেতা। বিশ্লেষকরা বলছেন, সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শনের পাশাপাশি আঞ্চলিক ও বিশ্বরাজনীতিতে নিজেদের প্রভাবের জানান দিতে চাইছে চীন।
মূলত, বর্তমান বিশ্বরাজনীতির অন্যতম বড় এক পরাশক্তির নাম চীন। দেশটির আসন্ন ভিক্টরি ডে প্যারেডের কূটনৈতিক গুরুত্ব নিয়ে চলছে নানান বিশ্লেষণ। এতে উপস্থিত থাকবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের মত প্রবল ক্ষমতাধর বিশ্বনেতারা।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার উচ্চপর্যায়ের বহু নেতার উপস্থিতির সম্ভাবনাও রয়েছে এ আয়োজনে। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন দেখিয়ে দিতে চাইছে, কেবল পশ্চিমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীই নয়, বরং পুরো ‘গ্লোবাল সাউথ’-এর প্রতিনিধি তারা।
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ক্ষমতায় আসার পর এটি চতুর্থ কুচকাওয়াজ হলেও, একেবারে ভিন্ন এবারের প্রেক্ষাপট। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে নতুন মোড় নেয়া আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নিজেদেরকে নতুনভাবে প্রমাণ করতে চাইছে চীন- এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ওয়েন-টি সুং বলেন, রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রচারণা দেখে মনে হচ্ছে, এটি হবে বহু বছরের মধ্যে চীনের সবচেয়ে বড় সামরিক কুচকাওয়াজ। দেশের ভেতরে অর্থনৈতিক চাপ, বাইরে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের সাথে বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যে আধুনিক চীনা সেনাবাহিনীর এক নতুন আত্মপ্রকাশ হিসেবে দেখা হচ্ছে এটিকে।
তিনি আরও বলেন, ফাঁস হওয়া তথ্য থেকে যতদূর জানতে পেরেছি, তারা নতুন অস্ত্র-প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে- যার মধ্যে রয়েছে মানববিহীন ড্রোন ও জাহাজ। বৈশ্বিক সামরিক প্রযুক্তির একেবারে সামনের সারিতে রয়েছে এগুলো। বিশেষ করে তাইওয়ান প্রণালীতে সম্ভাব্য যেকোনো আক্রমণ ঠেকাতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে এই মানববিহীন জাহাজ।
অনেকের মতে, এই প্যারেড কেবল সৈন্য ও অস্ত্র প্রদর্শনী নয়; বরং এটি যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, তাইওয়ান ও প্রতিবেশী দেশগুলোর দিকে চীনের একটি কৌশলগত বার্তা। গেল কয়েক বছরে চীনা সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে বড় ধরনের রদবদলের পর, এ কুচকাওয়াজ হবে শি-এর প্রতি তার সেনাবাহিনীর আনুগত্য প্রদর্শনের মঞ্চ।
উল্লেখ্য, প্যারেডের বড় আকর্ষণ থাকবে আধুনিক ট্যাংক, ফাইটার জেট, ড্রোন, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মিসাইল’সহ নানা অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র। এছাড়া শি জিনপিংয়ের ভাষণও থাকবে আকর্ষণের কেন্দ্রে।