রোমের ঐতিহাসিক টাওয়ার ধসে শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু

ইতালির রাজধানী রোমে একটি মধ্যযুগীয় টাওয়ারের অংশবিশেষ ধসে পড়ার ঘটনায় ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া এক রোমানিয়ান শ্রমিক নিহত হয়েছেন। সোমবার (৩ নভেম্বর) টোররে দেই কন্তি নামক টাওয়ারটি থেকে দীর্ঘ চেষ্টার পর তাকে উদ্ধার করা হলেও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই তিনি মারা যান। নিহত শ্রমিকের নাম অকটয় স্ট্রয়িচি।

এই মর্মান্তিক ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। মধ্যরাতের পর এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, নিজের এবং সরকারের পক্ষ থেকে টোররে দেই কন্তির ধসে নিহত শ্রমিক অকটয় স্ট্রয়িচির জন্য আমি গভীর দুঃখ এবং সমবেদনা জানাচ্ছি। এই অকথ্য কষ্টের সময়ে আমরা তার পরিবার এবং সহকর্মীদের পাশে আছি।

রোমের কলোসিয়ামের কাছে অবস্থিত ২৯ মিটার (৯৫ ফুট) উচ্চতার এই টাওয়ারটির দুটি অংশ ধসে পড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ভিডিওতে এটি দেখা গেছে প্রথম ধসটি ঘটে স্থানীয় সময় সাড়ে ১০টার দিকে এবং দ্বিতীয়টি ঘটে প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে।

ধ্বংসের সময় জানালা দিয়ে ধোঁয়া বেরিয়ে আসে এবং গাঁথনি ধসে পড়ার শব্দ শোনা যায়। দ্বিতীয় ধসটি ঘটেছিল যখন দমকল কর্মীরা এরিয়াল ল্যাডার নিয়ে কাঠামোতে কাজ করছিলেন। তবে কোনো দমকল কর্মী আহত হননি।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উদ্ধার অভিযানের দীর্ঘ সময় ধরে স্ট্রয়িচি সচেতন ছিলেন। তাকে উদ্ধার করে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় কিন্তু সেখানে তিনি মারা যান। উদ্ধারকারী দলের একজন জানান উদ্ধার কাজ দীর্ঘ হয়েছিল কারণ যতবারই শ্রমিকের দেহের কোনো অংশ মুক্ত করা হচ্ছিল ততবারই আরও ধস ঘটছিল এবং তিনি আবার ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ছিলেন।

এই ঘটনায় আরও একজন রোমানিয়ান শ্রমিককে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই টেনে বের করা হয় এবং গুরুতর তবে প্রাণঘাতী নয় এমন মাথায় আঘাত নিয়ে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। আরও দুজন শ্রমিক সামান্য আঘাত পান এবং তারা হাসপাতালে যেতে অস্বীকৃতি জানান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা বিকট শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন এবং ধোঁয়ার মেঘ দেখেছিলেন। আমি একজন শ্রমিককে নিচে পড়ে যেতে দেখেছি। আরেকজন, যিনি প্রথম ধসের সময় ভেতরে ছিলেন তিনি একটি বারান্দা থেকে পালাতে সক্ষম হন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রোমের মেয়র গুয়ালতিয়েরি এবং ইতালির সংস্কৃতি মন্ত্রী আলেসান্দ্রো জিউলি। পর্যটকদের ভিড়ে ঠাসা ফোরাম এবং পিয়াজ্জা ভেনেজিয়া এলাকাটি ঘেরাও করে রাখা হয়েছে।

টোররে দেই কন্তি মিনারটি ত্রয়োদশ শতাব্দীতে পোপ ইনোসেন্ট এর ভাই রিচার্ড কন্তি তার পরিবারের জন্য একটি সুরক্ষিত বাসস্থান হিসাবে নির্মাণ করেছিলেন। ১৩৪৯ সালের ভূমিকম্পে এটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সপ্তদশ শতাব্দীতেও কিছু অংশ ধসে পড়েছিল।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ