রুশ সেনাদের গোপন কথাবার্তা ফাঁস

ইউক্রেনের যুদ্ধের শুরুতে রাশিয়ার সেনা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে হওয়া অসংখ্য ফোন কলের রেকর্ড হাতে পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

এসব ফোন রেকর্ডের কিছু প্রকাশ করেছে তারা। যেগুলো গত মার্চে বুচা ও ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের আশপাশে অবস্থানরত সেনা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে হয়েছে।

সের্গেই নামে একজন সেনা তার মাকে বলছে, মা এই যুদ্ধ আমাদের সরকারের নেওয়া সবচেয়ে ‘স্টুপিড’ সিদ্ধান্ত।

২২টি ফোন ব্যবহার করে কয়েক হাজার বার বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলেছে এসব রুশ সেনা। তারা তাদের স্ত্রী, আত্মীয় ও বন্ধুদের কাছে ফোন দিয়েছে। যদিও ফোন ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছিল তাদের।

এসব ফোন রেকর্ড ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা প্রথমে পায়। এরপর সেগুলো নিউইয়র্ক টাইমসের কাছে পৌঁছে দেয় তারা।

ফাঁস হওয়া ফোন রেকর্ডের মাধ্যমে বুচায় গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার কিছু প্রমাণ সামনে এসেছে।

কিছু ফোন কলে সেনারা অভিযোগ করেন, তাদের কোনো ধরনের আগাম বার্তা না দিয়ে যুদ্ধে পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া অনেকে মারা যাচ্ছে বলেও জানায় কেউ কেউ। আরেকজনকে বলতে শোনা যায় তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ‘যাকে সামনে পাওয়া যাবে তাকেই হত্যা করতে।’

নিরাপত্তার কারণে নিউইয়র্ক টাইমস এসব সেনাদের শুধুমাত্র প্রথম নামটি প্রকাশ করেছে।

ফোনে সের্গেই তার মাকে জানায়, তাদের ৪০০ জন প্যারাট্রুপারকে এখানে পাঠানো হয়েছে। যার মধ্যে মাত্র ৩৮ জন এখন অক্ষত আছে। বাকিরা নিহত বা নিখোঁজ হয়েছে।

একজন সেনা তার আত্মীয়কে বলেন, একের পর এক কফিন আসছে। আমরা সেগুলো সমাহিত করছি।

আলেক্সান্ডার নামে একজন সেনা তার এক আত্মীয়কে বলেন, বুচায় অসংখ্য মানুষের লাশ পরে আছে। এগুলো আমাদের (সেনাদের) না। এগুলো বেসামরিক মানুষদের লাশ।

সের্গেই নামের ওই সেনা তার বান্ধবীকে একবার ফোন দিয়ে জানায়, তাদের বলা হয়েছে যাকে সামনে পাবে তাকেই হত্যা করতে।

তিনি তার বান্ধবীর কাছে একটি ভয়ানক ঘটনার বিবরণ দেন। সের্গেই জানান, তাদের অস্ত্রের গুদামের কাছ দিয়ে তিনজন ব্যক্তি হেঁটে যাচ্ছিলেন। তাদের তারা আটক করে এবং কঠিনভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওই তিনজনকে নিয়ে তারা আলোচনা করেন- তাদের কি ছেড়ে দেওয়া হবে? নাকি মেরে ফেলা হবে। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাদের মেরে ফেলা হবে। কারণ তাদের ছেড়ে দিলে তারা গিয়ে সেনাদের অবস্থান অন্যদের জানিয়ে দিতে পারে।

তাছাড়া আরেকজন সেনা বলেন, তাদের বলা হয়েছে ইউক্রেনে উগ্র নাৎসিরা আছে। কিন্তু এখানে এসে দেখেন সবাই সাধারণ মানুষ।

সূত্র: আল জাজিরা

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ