যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে কাজ করা রোধে সরকারের কড়া অভিযানের ফলে রেকর্ড সংখ্যক অবৈধ শ্রমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিশেষ করে টেকঅ্যাওয়ে রেস্তোরাঁ, ফুড ডেলিভারি সংস্থা, বিউটি পার্লার এবং কার ওয়াশগুলোর ওপর নজরদারি বাড়ানোর পরই এই বিপুল সংখ্যক গ্রেফতারের ঘটনা ঘটলো।
হোম অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক বছরে অবৈধ শ্রমিক হিসেবে ৮ হাজার ২২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৬৩ শতাংশ বেশি।
এই সময়ের মধ্যে ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্ট মোট ১১ হাজার বার অভিযান চালিয়েছে যা আগের বছরের তুলনায় ৫১ শতাংশ বেশি এই অভিযানগুলোও রেকর্ড সংখ্যায় পরিচালিত হয়েছে। এই অভিযানে ধরা পড়া ১ হাজার ৫০ জনেরও বেশি বিদেশী নাগরিককে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই কঠোর পদক্ষেপগুলোর পেছনে রয়েছে অভিবাসন এনফোর্সমেন্টের জন্য বরাদ্দ করা ৫ মিলিয়ন পাউন্ড যা টেকঅ্যাওয়ে, বিউটি পার্লার এবং কার ওয়াশের মতো স্থানগুলোতে অবৈধভাবে কর্মরত অভিবাসীদের গ্রেফতার, আটক ও বহিষ্কারের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছিল।
এই অভিযানের পাশাপাশি সরকার এখন কাজের অধিকার যাচাই প্রক্রিয়া সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে। বুধবার থেকে এই বিষয়ে ছয় সপ্তাহের জন্য একটি পরামর্শ পর্ব শুরু হতে চলেছে।
বর্তমানে যে সমস্ত কর্মী প্রথাগত নিয়োগকর্তা কর্মচারী চুক্তির অধীনে কাজ করেন কেবল তাদের জন্যই কর্মক্ষেত্রে বৈধতার প্রমাণ যাচাই করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু মন্ত্রীরা এই ‘লুপহোল’ বন্ধ করতে চাইছেন যাতে ক্যাজুয়াল, অস্থায়ী বা সাবকন্ট্রাক্ট ভিত্তিতে কাজ করা কর্মীদেরও তাদের বৈধতার স্ট্যাটাস প্রমাণ করতে হয়। এই পদক্ষেপ মূলত ‘গিগ ইকোনমি’কে লক্ষ্য করে নেওয়া হচ্ছে।
নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী যদি কোনো নিয়োগকর্তা সঠিক যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হন তাহলে প্রতি অবৈধ কর্মীর জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ৬০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ এই প্রসঙ্গে দৃঢ় বার্তা দিয়ে জানিয়েছেন, অবৈধভাবে কাজ করা এবং অবৈধভাবে আসা আর নয়। বিউটি পার্লার, কার ওয়াশ এবং ডেলিভারি ড্রাইভার হিসেবে যারা অবৈধভাবে কাজ করতে ধরা পড়বে তাদের গ্রেফতার, আটক এবং এই দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। ব্রিটেনের সীমান্ত সুরক্ষিত করতে আমি যা যা করার তার সবই করব।