শরীরের বাড়তি মেদ ঝরাতে অনেকেই ননানাভাবে চেষ্টা করেন। কেউ জিমে যান, কেউ নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, কেউ বা খাবারে নানা ধরনের বিধিনিষেধ মেনে চলেন। প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসা পদ্ধতি আয়ুর্বেদ মতে, শরীরের ভারসাম্য রক্ষা এবং হজমশক্তিকে শক্তিশালী করার মাধ্যমেই সুস্থ উপায়ে ওজন কমানো সম্ভব। আয়ুর্বেদ কেবল শরীরের বাইরের মেদ নয়, ভেতরের স্বাস্থ্যকেও ঠিক রেখে ওজন কমাতে সাহায্য করে। আয়ুর্বেদ অনুযায়ী কিছু কৌশল অনুসরণ করলেই শরীরের মেদ দ্রুত ঝরিয়ে ওজন কমানো সম্ভব। যেমন-
সকালে পান করুন ‘ডিটক্স ওয়াটার’
সকাল হালকা গরম দিয়ে দিন শুরু করলে হজমশক্তি কাড়বে। এর সঙ্গে জিরা, ধনিয়া ও মৌরি মিশিয়ে পান করলে দারুণ উপকার পাওয়া যায়। এই পানীয়টি শরীর ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে বিপাক হার বাড়িয়ে চর্বি গলাতে ভুমিকা রাখে। এক গ্লাস গরম পানিতে ১ চা চামচ জিরা, ১ চা চামচ ধনিয়া ও ১/২ চা চামচ মৌরি মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। মিশ্রণটি হালকা ঠান্ডা হলে পান করুন।
খাবার খাওয়ার সময়ে পরিবর্তন আনুন
আয়ুর্বেদে সময় মেনে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই অভ্যাস আপনার শরীরকে চর্বি গলাতে যথেষ্ট সময় দেয়। দিনের প্রথম ও শেষ খাবারের মধ্যে অন্তত ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টার ব্যবধান রাখুন। অর্থাৎ, যদি রাতে ৮টায় ডিনার করেন, তবে পরের দিন সকাল ১০টার আগে আর কিছু খাবেন না। এই সময় হজম প্রক্রিয়াকে বিশ্রাম দেয়।
খাবার খান ধীরে এবং মন দিয়ে
ওজন কমানোর সবচেয়ে সহজ কিন্তু শক্তিশালী কৌশল হলো দীরে ধীরে খা্বা খাওয়া। খাবার সময় অন্য কোনও কাজ যেমন- টিভি দেখা বা মোবাইল ব্যবহার করা দেখে বিরত থাকুন। সময় নিয়ে ধীরে ধীরে খাবার চিবিয়ে খান। আয়ুর্বেদ মতে, এভাবে খেলে খাবার ঠিকমতো হজম হয় এবং মস্তিষ্ক তৃপ্তির সংকেত পায়। ফলে অতিরিক্ত খাওয়া কমে যায়।
মসলার সঠিক ব্যবহার করুন
রান্নাঘরের কিছু সাধারণ মসলা আপনার বিপাক হার বাড়াতে সাহায্য করে। হলুদ, আদা, দারুচিনি এবং গোলমরিচ হল প্রাকৃতিক ফ্যাট বার্নার। এগুলি শরীরে জমে থাকা টক্সিন ভাঙতে ও চর্বি হজমে সাহায্য করে। প্রতিদিনের রান্নায় এই মসলাগুলি ব্যবহার করুন। এছাড়াও,শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সকালে আদা ও মধু মিশ্রিত গরম পানি পান করুন।
রাতে হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খান
আয়ুর্বেদ মতে, রাতে আমাদের হজমশক্তি দুর্বল থাকে। এ কারণে ভারী খাবার হজম করতে কষ্ট হয় এবং অতিরিক্ত ক্যালোরি চর্বি হিসেবে জমে যায়। সূর্যাস্তের আগে বা সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে রাতের খাবার সেরে নেওয়া ভালো। রাতে অতিরিক্ত প্রোটিন বা কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন।
এসব নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি মেদ ঝরাতে নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম এবং হালকা যোগব্যায়াম বা হাঁটাচলাও জরুরি।