ভরা মৌসুমেও দেখা মিলছে না খেজুর রসের

খেজুর রস না খেতে পারলে মনেই হয় না শীত মৌসুম এসেছে। ভরা শীত মৌসুমেও দেখা মিলছে না খেজুরের রসের। পুরো এলাকায় প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে খেজুর গাছের। কোথাও দেখা মিলছে না খেজুর রস আরোহণকারী গাছিদের।

এক সময় মানুষের বাড়িতে, সড়কের পাশে সারি সারি খেজুর গাছ দেখা যেত। শীতের মৌসুম শুরু হতেই রস আহরণকারী গাছিরা বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে রস আহরণের জন্য খেজুর গাছগুলোকে পাইল করতেন। পাইল করার কয়েক দিন পরেই শুরু হয় গাছগুলোতে হাঁড়ি বাঁধা। এখন আর খেজুর গাছ নেই বললেই চলে। বুধবার দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে।

এ নিয়ে উপজেলার গোপালপুর, বিজয়পুর, পাথারিয়া, নোয়াগাঁও ও বিরিশিরি গ্রামের খেজুর গাছি ও এলাকাবাসী জানান, খেজুরে রস এখন বিলুপ্ত বললেই চলে। এক সময় গ্রামের প্রায় সব মানুষ শীতের সকালে বাজার করতে গিয়ে প্রথমেই এক গ্লাস খেজুরের রস খেয়ে শীতের আমেজকে জানান দিতেন। এখন আর সেই দৃশ্য দেখা যায় না বললেই চলে।

সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে দেশের গ্রামাঞ্চলে বেশি বেশি খেজুর গাছ রোপণ করা প্রয়োজন। তাহলে হয়তো আমাদের ছেলেমেয়েদের মাঝে সেই খেজুর রসের পিঠা উৎসব ও শীতকে ঘিরে গ্রামবাংলা থেকে হারিয়ে যাওয়া বাঙালির আনন্দ-উল্লাস আবারো ফিরে আসবে।

গাছি আব্দুল হেলিম বলেন, আগে পরিবেশ ছিল ভালো। প্রতিটি গাছে ছিল ফুলে ফলে ভরা। বিভিন্ন পরিবেশ দূষণের কারণে ফল মূলের গাছে আগের মতো ফল ধরে না। খেজুর গাছের হাঁড়িতেও আগের মতো রস আসে না। মাটির উর্বরতাও কমে গেছে।

কলেজ শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, গত বছর অনেক খোঁজাখুঁজি করে আত্রাখালি এলাকায় খেজুর রস খেয়েছিলাম তবে এ বছর এখনো দেখা মেলেনি খেজুর রসের।

এ নিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মাহবুবুর রহমান বলেন, খেজুরের রসের সঙ্গে বাঙালি সংস্কৃতির একটি মিল রয়েছে। নানা কারণেই দিন দিন খেজুর গাছগুলো হারিয়ে যাওয়ায় সেই ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। খেজুর গাছ রোপণে সরকারি কোনো প্রকল্প নেই। তবে কোনো কৃষক যদি খেজুর গাছ রোপণের আগ্রহ প্রকাশ করে তাহলে কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ