বন্যাও আমরা মোকাবেলা করব, খেলাধুলাও চলবে: প্রধানমন্ত্রী

খেলাধুলাকে এগিয়ে নেয়ার মাধ্যমে দেশে বিশ্বমানের ক্রীড়াবিদ তৈরিতে সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বন্যাও আমরা মোকাবেলা করব, খেলাধুলাও আমাদের চলবে, সবই আমাদের চলবে। এটাই আমাদের জীবন, এটাকেই মেনে নিতে হবে। এটাই বাস্তব এবং বাস্তবতার সঙ্গে তাল মিলিয়েই আমাদের চলতে হবে। বিশ্ব সভায় আমরা মাথা উঁচু করেই চলব।

প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে তাঁর কার্যালয়ের শাপলা হলে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াক্ষেত্রে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনা ক্রীড়াবিদদের সংবর্ধনা ও সম্মাননার চেক বিতরণকালে দেয়া ভাষণে একথা বলেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ২০২১ সালের সাফজয়ী অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলা ফুটবল দলের ৩৩ জনসহ মোট ৮৮ জন ক্রীড়াবিদ, সংগঠক ও ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে আর্থিক সম্মাননা প্রদান করা হয়।

অপর ৫৫ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে মুজিববর্ষ ফিফা আন্তর্জাতিক ফুটবল সিরিজ ২০২০-এর ৩৩ জন এবং বঙ্গবন্ধু ৪ জাতি ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২২-এর বিজয়ী ২২ জন খেলোয়াড় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

অনুষ্ঠানে সাফজয়ী নারী অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল দলের অধিনায়ক মারিয়া মান্দা, খেলোয়াড় মনিকা চাকমা ও প্রধান প্রশিক্ষক গোলাম রব্বানী ছোটন; বাংলাদেশ ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন ফয়সাল খান ও বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার হাতে আর্থিক চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানের শুরুতে তিন শ্রেণীর ক্রীড়া দলের উপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি (বাফুফে) কাজী মো. সালাহউদ্দিন, মারিয়া মান্দা ও ফয়সাল খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। স্বাগত বক্তৃতা করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খেলার মাঠে সব সময় চিন্তায় রাখতে হবে আমরা যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি, আমরা বিজয়ী জাতি। হার-জিত খেলায় আছে এটা ঠিক, কিন্তু মাথায় এটা রাখতে হবে যে আমাকে জিততে হবে।

প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলায় পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারের পাশাপাশি এগিয়ে আসতে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, খালি ব্যবসা করবেন আর ইন্ডাষ্ট্রি করবেন আর পয়সা বানাবেন সেটা তো হয় না। দেশের জন্য তো কিছু করতে হবে। এটাই আমি চাই। এই বার্তা আমাদের ব্যবসায়ীদের দিয়ে দেয়া উচিত। খেলোয়াড়দের যদি ব্যবসায়ীরা নিয়োগ দিয়ে রাখে, তাহলে তারা খেলাধুলার দিকে সম্পূর্ণভাবে মনোযোগ দিতে পারে। জীবন জীবিকার কথা চিন্তা করার প্রয়োজন হয় না।

বেসরকারি খাতে সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত আমরা সহযোগিতা করব তত উত্কর্ষ বাড়বে। যারা খেলবে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনবে, তাদের জীবন জীবিকার সুযোগটাও আমাদের করে দিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, খেলোয়াড়রা কেবল খেলাধুলাই করবে এবং দেশে যত বেশি ক্লাব হবে, যত বেশি প্রতিযোগিতা হবে খেলাধুলায় ততো বেশি উত্কর্ষ বাড়বে। সেই ধরনের পরিবেশ আমাদের গড়ে তুলতে হবে।

গ্রামীণ খেলাধুলার প্রচার এবং প্রসারে আরো জোর দেয়ার জন্য তাঁর সরকার ইতোমধ্যে বাংলাদেশ কান্ট্রি গেমস এসেসিয়েশনকে স্বীকৃতি দিয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

তিনি এ সময় সারাদেশের উপজেলা পর্যায়ে নির্মাণাধীন মিনি স্টেডিয়ামের কাজ আরো দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। যে সব জায়গায় স্টেডিয়াম নির্মাণে জমি পাওয়া যাবেনা সেখানে প্রয়োজনে জমি কিনে প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করতে বলেন তিনি।

শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্রীড়াক্ষেত্রে দেশের জন্য বয়ে আনা বিভিন্ন সাফল্যের উল্লেখ করে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধীদের এক সময় বোঝা মনে করা হলে সুযোগ পেলে তারাও যে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনতে পারে, তারা আজকে তা প্রমাণ করেছেন। তারা প্রমান করেছে যে, তারা দেশের সম্পদ।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ