পুরুষ সেজে চাচিকে বিয়ে করল তরুণী

রাজশাহীতে অভিনব কায়দায় পুরুষ সেজে দূর সম্পর্কের এক চাচিকে ভাগিয়ে রাজধানী ঢাকায় নিয়ে বিয়ে করেছেন ২২ বছরের এক তরুণী।

ঘটনার ১০ দিন পর শুক্রবার প্রকাশ্যে আসে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ওই তরুণীর আসল পরিচয়।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পুরুষ সাজার পর ওই তরুণী নিজের নাম রাখেন ফাহিম। এরপর ১৯ বছর বয়সী চাচির সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ফাহিম নামধারী তরুণী বিয়ের পর কৃত্রিম পুরুষাঙ্গ ব্যবহার করায় চাচি বিষয়টি এতদিন টের পাননি বলে দাবি করেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ওই তরুণী সাত মাস আগে স্বামীর কাছ থেকে তালাক নেন। তার দেড় বছর বয়সী এক মেয়ে রয়েছে। বিবাহ বিচ্ছেদের পর হঠাৎ তিনি নিজের মধ্যে পরিবর্তন আনেন। নিজেকে পুরুষ হিসেবে নতুন করে পরিচয় দেন এবং প্যান্ট-শার্ট পরতে শুরু করেন। ছেলেদের মতো ছোট করে চুলও কাটেন তিনি। এরপর দূর সম্পর্কের এক চাচির সাথে গড়ে তোলেন প্রেমের সম্পর্ক। ফাহিম নামধারী ওই তরুণীর প্রেমের টানে চাচিও নিজের স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটান। তবে ওই সংসারে তার কোনো সন্তান নেই।

সূত্রটি আরো জানায়, ১০ দিন আগে পুরুষ পরিচয় দেয়া ফাহিম ও চাচি ঢাকায় পালিয়ে যান। সেখানে গিয়ে বিয়ে করেন। তারপর এক আত্মীয়ের বাড়িতে দু’জনে থাকতে শুরু করেন। এ নিয়ে ফাহিম নামধারী পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়। এছাড়া ফাহিমের চাচির পরিবার খবর পেয়ে তাদের দু’জনকে কৌশলে বাড়িতে আনার চেষ্টা শুরু করেন।

বৃহস্পতিবার রাতে ফাহিম ওই চাচিকে নিয়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে ফেরেন। তাদের আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। নিজেকে পুরুষ দাবি করা ফাহিম আসলেই পুরুষে রূপান্তরিত হয়েছেন কিনা, এ নিয়ে সবার মনে সন্দেহ-সংশয় দেখা দেয়। স্থানীয়দের চাপের মুখে তিনি শেষ পর্যন্ত মুখ খোলেন, পুরুষে রূপান্তরিত হননি বলেও স্বীকার করেন।

এদিকে খবর পেয়ে শুক্রবার গোদাগাড়ী থানা পুলিশ ওই গ্রামে গিয়ে দু’জনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তাদের থানায় নেয়া হয়। এ সময় ওই তরুণীর দূর সম্পর্কের চাচি পুলিশের কাছে দাবি করেন, তারা দু’জনে ঢাকায় গিয়ে বিয়ে করেছেন। যদিও পুলিশকে তারা বিয়ের কাগজ দেখাতে পারেননি। বিয়ের পর তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হলেও অভিযুক্ত তরুণীর নকল পুরুষাঙ্গ ব্যবহারের বিষয়টি কখনো টের পাননি বলে দাবি করেন চাচি। তবে ফাহিমের বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই বলেও পুলিশকে সাফ জানিয়ে দেন তিনি।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি খুবই চাঞ্চল্যকর। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কথা ও কাজের কোনো মিল পাওয়া যাচ্ছে না। এদের এমন বিচিত্র সম্পর্ক আইনের কোনো ধারার মধ্যেও আনা যাচ্ছে না। তাই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে একটি সাধারণ ডায়েরি করে তার ভিত্তিতে ফাহিম নাম ধারণ করা তরুণীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার কথিত চাচিকেও পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হবে বলে জানান ওসি।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ