পাকিস্তানের যেকোনো দুঃসাহসের ফল হবে যন্ত্রণাদায়ক: ভারত

ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক আবারও উত্তেজনার কেন্দ্রে এসে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের একটি মন্তব্যকে ঘিরে এই উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করেছে। আসিম মুনির প্রকাশ্যে ভারতের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনার কথা তুলেছেন, যার কড়া জবাব দিয়েছে ভারত।

আজ বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পাকিস্তানের এ ধরনের মন্তব্যকে ‘পুরোনো কৌশল’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি কঠোর ভাষায় সতর্ক করে বলেন, পাকিস্তানের যেকোনো দুঃসাহসিক পদক্ষেপের ফল হবে যন্ত্রণাদায়ক। ঠিক যেমনটা অপারেশন সিঁদুরে হয়েছে।

ভারতের এ বক্তব্য কেবল একটি সতর্কবার্তা নয়, এটি সামরিক প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনার ইঙ্গিতও বহন করছে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের এমন উসকানি তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যর্থতা আড়াল করার একটি উপায়, যা অতীতে বহুবার দেখা গেছে।

এদিকে গত দুই মাসে আসিম মুনিরের এটি ছিল দ্বিতীয় যুক্তরাষ্ট্র সফর। সেখানে একটি নৈশভোজে তিনি বলেন, পাকিস্তান একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ, যদি তারা ধ্বংসের পথে অগ্রসর হয়, তবে অর্ধেক বিশ্বকে নিয়ে ধ্বংস হবে। এর পাশাপাশি তিনি সিন্ধু পানি চুক্তির প্রসঙ্গ তুলে ভারতকে সরাসরি হুমকি দেন, ভারত যদি বাঁধ তৈরি করে, তবে তা ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ধ্বংস করা হবে।

পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টোও একই ধরনের মন্তব্য করেছেন। গত সোমবার সিন্ধু প্রদেশে এক সমাবেশে বিলাওয়াল ভুট্টো বলেছেন, ভারত যদি আগ্রাসন চালিয়ে যায়, তবে ছয়টি নদীর পানি পাওয়ার জন্য যুদ্ধ ছাড়া বিকল্প থাকবে না।

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করে এমন ধারাবাহিক মন্তব্যে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র আসিম মুনিরের বক্তব্যকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেনি, তারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের লড়াইয়ের প্রশংসা করেছে, যা কূটনৈতিক মহলে দ্বৈত বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

তবে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞেরা সতর্ক করে দিয়েছেন, সিন্ধু পানি চুক্তি ভেঙে গেলে দক্ষিণ এশিয়ার খাদ্য ও জলনিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের অবনতি পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য বিপজ্জনক। ইতিহাসবিদদের মতে, ১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধ থেকে দুই দেশের প্রতিটি বড় সংঘাতে পরমাণু হুমকির প্রসঙ্গ এসেছে, তবে আজকের বৈশ্বিক ভূরাজনীতির প্রেক্ষাপটে এটি আরও উদ্বেগজনক।

তবে নয়াদিল্লি স্পষ্ট করে দিয়েছে, নিজেদের সম্মান ও সুরক্ষার প্রয়োজনে তারা কঠোর পদক্ষেপ নিতেও পিছপা হবে না। এ পরিস্থিতি ইঙ্গিত করছে, দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ