নির্বাচনে কোন দল কত ভোট পেতে পারে, সানেম-একশনএইডের জরিপে জানালেন তরুণরা

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অন্য সব রাজনৈতিক দলের চেয়ে বেশি ভোট পাবে বল মনে করেন তরুণরা। তাদের বিবেচনায় সর্বাধিক ৩৮ দশমিক ৭৬ ভোট পাবে দলটি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ দশমিক ৪৫ ভোট পাবে জামায়াতে ইসলামী। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পাবে ১৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পায়, তাহলে ১৫ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ ভোট পাবে।

দেশের তরুণদের ওপর পরিচালিত মাঠ পর্যায়ের এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা একশনএইড বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে গত ২০ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। সোমবার রাজধানীর হোটেল ব্র্যাক ইনে জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগের দুটি জেলার দুটি করে উপজেলার দুই হাজার তরুণের ওপর জরিপটি পরিচালনা করা হয়।

‘রূপান্তরকালে তরুণ সমাজ : জুলাই পরবর্তী কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের গতি’ শিরোনামের এই জরিপে ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের তরুণের মতামত নেওয়া হয়েছে। জরিপে অংশ নেওয়া তরুণদের একটা অংশ এখনও ভোটার নন। এ হারটা কত তা স্পষ্ট নয়।
জরিপের ফল বলছে, নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর বাইরের ইসলামিক দলগুলো ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ ভোট পেতে পারে। জাতীয় পার্টি পাবে ৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ ভোট। অন্যান্য ছোট দলগুলো পাবে শূন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ ভোট।

তরুণদের মতে দেশের কোন বিভাগে কোন দল কী হারে ভোট পেতে পারে, তারও একটা চিত্র তুলে আনা হয়েছে জরিপে। এতে দেখা যায়, সব বিভাগেই এগিয়ে রয়েছে বিএনপি। দলটি সবচেয়ে বেশি ৪১ দশমিক ৯৭ শতাংশ ভোট পেতে পারে চট্টগ্রাম বিভাগে। সবচেয়ে কম ৩৬ দশমিক ১৩ শতাংশ পেতে পারে সিলেটে।

ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের বিষয়ে উত্তর দাতাদের কাছে প্রশ্ন ছিল– আপনি কি মনে করেন ধর্মভিত্তিক রাজনীতি দেশের উন্নয়নের জন্য কল্যাণকর? জবাবে ৫১ দশমিক ৭৭ শতাংশ ‘হ্যাঁ’ সূচক জবাব দিয়েছেন। বাকিরা ‘না’ সূচক জবাব দিয়েছেন। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে পার বলে মনে করে জরিপে অংশ নেওয়া তরুণদের ১১ দশমিক ৬ শতাংশ। ১৪ দশমিক ১ শতাংশ তরুণ মনে করেন, এ জন্য ১০ থেকে ২০ বছর সময় লাগতে পারে। উত্তর দাতার ২২ দশমিক ৮ শতাংশ মনে করেন, ধর্মভিত্তিক দল কোনোদিন এ দেশের শাসন ক্ষমতায় আসতে পারবে না।

জরিপে অংশ নেওয়া তরুণ ভোটারদের ৭৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে চান। তবে রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে তাদের অংশগ্রহণের বিষয়ে হতাশা ও অনাগ্রহ রয়েছে।

৮২ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণ জানিয়েছেন, তারা রাজনীতিতে যুক্ত হতে চান না। কারণ হিসেবে রাজনৈতিক সহিংসতা ও রাজনীতিবিদদের নৈতিকতার অভাবের কথা বলেছেন তারা।

জরিপটি পরিচালনার ব্যাখ্যা দিয়ে সানেমের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান অনুষ্ঠানে বলেন, জুলাই বিপ্লবের এক বছর পর কর্মসংস্থান নিয়ে তরুণদের ভাবনা, চ্যালেঞ্জ, আশাবাদ ও হতাশা বুঝতে এ জরিপ পরিচালনা করা হয়।

একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা ছিল অনেক। তরুণ সমাজের আন্দোলনের মূলে ছিল বৈষম্যের অবসান। তবে তা কি হয়েছে? এখনও নানাভাবে নানান পর্যায়ে বৈষম্য রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ