থিম্পু থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে ঢাকাকে সহযোগিতা করবে দিল্লি

ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে ভারত বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত দাশো কর্মা হামু দর্জি। তিনি বলেন, শুধু জ্বালানি নয়; জলবায়ু মোকাবিলাসহ আঞ্চলিক নানা ক্ষেত্রে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা হলে তা তিন দেশকেই লাভবান করবে। আজ সোমবার এক সেমিনারে রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন।

সোমবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ‘বাংলাদেশ-ভুটান সম্পর্ক: ভাগাভাগি সমৃদ্ধির জন্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নীতকরণ’ শীর্ষক এক কান্ট্রি লেকচারের আয়োজন করে। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ভুটানের দূত। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সচিব মাশফি বিনতে শামস। স্বাগত বক্তব্য দেন বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, কূটনৈতিক মিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গবেষক, শিক্ষাবিদ, থিঙ্কট্যাঙ্ক প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেন।

চলমান নানা পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়ছে মন্তব্য করে দাশো কর্মা হামু দর্জি বলেন, এই অস্থির সময়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ার ভাগ্যোন্নয়নে সার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এটিকে কার্যকর করার ক্ষেত্রে সব সদস্য দেশকেই এগিয়ে আসতে হবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, চীন ও ভারতের সঙ্গে ভুটানের সীমান্ত রয়েছে। দুই দেশের সঙ্গেই আমাদের সম্পর্ক ভালো।

বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে আগ্রহী ভুটান জানিয়ে দেশটির রাষ্ট্রদূত বলেন, ভুটানের সঙ্গে ২০২৩ সালের ট্রানজিট চুক্তি অনুযায়ী একটি ট্রায়াল রান পরিচালিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে সেপ্টেম্বরে একটি কন্টেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছে। এটি ট্রানজিট অনুযায়ী সড়কপথে ভুটান যাবে। একইভাবে ভুটান থেকে আরেকটি ট্রায়াল রান পরিচালিত হবে, যেটি বাংলাদেশে ট্রানজিট হয়ে তৃতীয় কোনো দেশে যাবে। এই পরীক্ষামূলক কাজের উদ্দেশ্য, ক্রসবর্ডার ট্রানজিটে যে কোনো অপারেশনাল চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা।

পরিবেশ, জলবিদ্যুৎ সহযোগিতা, পর্যটন ও শিক্ষার মতো অভিন্ন অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলোর ওপর জোর দেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ভুটান পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধা এবং আঞ্চলিক সম্প্রীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎমুখী সম্পর্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

দাশো কর্মা হামু দর্জি আরও জানান, বর্তমানে ২৩০ জন ভুটানি মেডিকেল শিক্ষার্থী বাংলাদেশে অধ্যয়ন করছেন। ভুটানে বাংলাদেশিদের ভ্রমণ আরও সহজ হয়েছে। গত এক বছরে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশি ভ্রমণ করেছেন।

অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে বাণিজ্য, সংযোগ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি সহযোগিতার ক্ষেত্রে সম্ভাবনাগুলোকে কাজ লাগতে বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে আরও যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, এই সহযোগিতাগুলো অঞ্চলে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হিসেবে কাজ করতে পারে।

মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম দেশ ভুটান। দুই দেশের এই দীর্ঘ বন্ধুত্ব আরও সুদৃঢ় করতে অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও উন্নয়নমূলক সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ