ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর ইরানের সরকারপক্ষের শীর্ষ কর্মকর্তারা একে ‘বিজয়’ হিসেবে উদযাপন করছেন। সরকারপন্থি সমর্থকরাও রাস্তায় মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়ে পতাকা হাতে উল্লাস করছেন। এসময় তাদের ইরানের জাতীয় পতাকা নাড়িয়ে সরকারকে সমর্থন জানাতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে পাওয়া ফুটেজে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। খবর বিবিসি ও আল-জাজিরার
ফুটেজে দেখা গেছে, তাদের গাড়ির স্পিকারে সরকারকে প্রশংসা করে উচ্চস্বরে গান বাজানো হচ্ছে। তবে শহরের অন্য প্রান্তে, অনেক বাসিন্দার মধ্যে দেখা গেছে উৎকণ্ঠা। অনেকে আশঙ্কা করছেন, এই যুদ্ধবিরতির পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে অন্য কোনো কৌশল।
একজন নাগরিক বিবিসিকে বলেন, ‘আমি মনে করি এই যুদ্ধবিরতি শুধুই আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে বিভ্রান্ত করার জন্য। এটা একটি ফাঁদ।’
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র কোনো সিদ্ধান্তই কারণ ছাড়া নেয় না। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে খামেনিকে তার গোপন আস্তানা থেকে বের করে আনা। অন্য কোনো কারণ নেই।’
তবে যুদ্ধবিরতির পর জটিলতা সত্ত্বেও ইরানের সরকারপক্ষের শীর্ষ কর্মকর্তারা একে ‘বিজয়’ হিসেবে উদযাপন করছেন। দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ বলেছেন, এই ‘বিজয়’ প্রমাণ করেছে ইরান ‘যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের শিং ভেঙে দিয়েছে’ এবং পুরো অঞ্চলে ইরানের সক্ষমতা নতুনভাবে দেখিয়েছে।
দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার ও আইআরজিসির (ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী) সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফের শীর্ষ উপদেষ্টা মেহদি মোহাম্মাদি একে ‘বৃহৎ ও ইতিহাস গড়া বিজয়’ বলে উল্লেখ করেছেন। এক্স (টুইটার)-এ তিনি লিখেছেন, ‘একটি নতুন যুগ শুরু হয়েছে।’
এদিকে, ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, ‘ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেউ উৎপাটন করতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যে ক্ষমতা ও সক্ষমতা রয়েছে, তা বিবেচনায় নিয়ে বলা যায় পারমাণবিক কর্মসূচি অটল থাকবে এবং কোনোভাবেই থামানো যাবে না।’
মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। ট্রাম্প তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে ইরানের টেলিভিশনের খবরেও যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কথা বলা হয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের ঘোষণা দেয়ার আগে তেহরান ইসরায়েলে একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে চারজন নিহত হয়েছে। এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল।