তরুণীকে হেনস্থা করা সেই নারী ৩ দিনের রিমান্ডে

নরসিংদী রেলস্টেশনে আধুনিক পোশাকের অজুহাতে এক তরুণীকে হেনস্তার ঘটনার মূল হোতা শিলা আক্তারের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার সন্ধ্যায় নরসিংদী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক দেলোয়ার হোসেন এই রায় প্রদান করেন।

এর আগে রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে শিবপুরের ইটাখোলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১ এর একটি দল।

র‌্যাব-১১ সূত্রে জানা যায়, স্টেশনে তরুণীকে লাঞ্ছিতের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে মূলহোতা শিলা আক্তার ওরফে শায়লা আত্মগোপনে চলে যান। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিবপুর উপজেলার ইটাখোলা এলাকায় শিলার খালার বাসায় অভিযান চালায়। সেখানে থেকে রাত ৩টার দিকে তাকে গ্রেফতার করে তাকে রেলওয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

র‌্যাব-১১ আরও জানায়, ঘটনার এই মূলহোতা শিলা আক্তার নামে পরিচিত হলেও তার মূল নাম মারজিয়া। তিনি পেশায় একজন ঘটক। একইসঙ্গে তিনি প্রস্টিটিউশনের সর্দার।

রেলওয়ে পুলিশের এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হারুনুর জামান রুমেল জানিয়েছেন, সন্ধ্যায় গ্রেফতার শিলা আক্তার ওরফে মাজিয়াকে নরসিংদী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক দেলোয়ার হোসেনের আদালতে সোপর্দ করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। পরে আদালতের বিচারক ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ১৮ মে সকালে নরসিংদী রেল স্টেশনের ১নং প্লাটফর্মে ঢাকাগামী চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন দুই তরুণ ও এক তরুণী। মেয়েটির পড়নে ছিল জিনস প্যান্ট ও টপস। তাই দেখে স্টেশনে অবস্থানরত এক নারী প্রথমে ওই তরুণীকে আঘাত করে ও পরে আরও কয়েকজন ব্যক্তি তার ওপর হামলার চেষ্টা চালায়।

ভুক্তভোগী ওই তরুণী দৌড়ে স্টেশন মাস্টারের কক্ষে আশ্রয় নিয়ে তাকে বাঁচানোর অনুরোধ করে। পরে স্টেশন মাস্টারের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদেরকে ঢাকাগামী চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনে উঠিয়ে দেয়া হয়।

তরুণীকে হেনস্থা ও মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার দুই দিন পর শুক্রবার রাতে নরসিংদী শহরের ইউএমসি জুট মিলের সামনে থেকে ইসমাইল মিয়া নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে নরসিংদীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ সিদ্দিকীর আদালতে সোপর্দ করা হয়।

ওই রাতেই নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইমায়েদুল জাহেদী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ও ৩০ ধারায় ভৈরব রেলওয়ে থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে এক নারীসহ দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত আরও এক নারী ও ১০ পুরুষকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিওতে অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের আসামি করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ