পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে রাজধানী থেকে নৌপথে ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ নেই সদরঘাটে। শনিবার ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চগুলো স্বাভাবিকের ছেয়েও কম যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সদরঘাটে যাত্রীর কোনো চাপ নেই। তবে ইতোমধ্যে সব রুটের কেবিনগুলো অগ্রিম বুক হয়ে গেছে। নতুন করে কোনো কেবিন টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া সদরঘাটে লঞ্চের দুই-একটি কাউন্টার ছাড়া প্রায় কাউন্টার বন্ধ রয়েছে। তবে কালোবাজারে চড়া মূল্যে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন একাধিক যাত্রী।
ঢাকা বরগুনা রুটে চলাচলরত এমকে শিপিং লাইন্সের কর্মী মশিউর রহমান বলেন, বরগুনা রুটে আমাদের ৫টি লঞ্চ রয়েছে। ওইসব লঞ্চের সব অগ্রিম টিকিট বুকিং হয়ে গেছে। এখন আমুয়া রুটের কিছু টিকিট রয়েছে। সেগুলো আমরা যাত্রীদের দিচ্ছি।
আল আমীন নামে একজন যাত্রী যুগান্তরকে বলেন, গত দুই-তিন দিন ধরে বরিশালগামী লঞ্চের অগ্রিম টিকিট কেনার জন্য ধরনা দিচ্ছি সংশ্লিষ্ট লঞ্চ কোম্পানিগুলোর টিকিট কাউন্টারে। কিন্তু টিকিট না পাওয়ায় বিকল্প পথে বাড়ি যাওয়ার কথা ভাবছিলাম। পরে পরিচিত একজন লঞ্চ স্টাফকে বিষয়টি জানালে তিনি শনিবার সকালে আসতে বলেন। এসে তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে প্রতিটি কেবিনে অতিরিক্ত ৩ হাজার টাকা করে দিয়ে দুইটি কেবিন নিয়েছি। তবে লঞ্চের নাম জানাতে অস্বীকার করেন তিনি।
সূত্র বলছে, প্রায় রুটের লঞ্চগুলোতে কতিপয় কেরানী ও স্টাফরা কেবিন বুকিং দিয়ে টিকিট নিয়ে রেখেছে। পরিচিত ব্যক্তিদের মাধ্যমে ওইসব টিকিট চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি টিকিট ২ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে ঈদে যাত্রী পরিবহণ নির্বিঘ্ন করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এগুলোর মধ্যে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন, প্রত্যেক বাহিনীর আলাদা কন্ট্রোল রুম স্থাপন, যাত্রীদের নিরাপদে লঞ্চে আরোহনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ সার্বক্ষণিক মাইকিং করে নির্দিষ্ট লঞ্চের তথ্য দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া নদীবন্দরে পর্যাপ্ত বিশ্রামাঘার, পাবলিক টয়লেট ও পার্কিং সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) শেখ মো. সেলিম রেজা যুগান্তরকে বলেন, যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করার জন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। আইন লঙ্ঘনকারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
টিকিট কালোবাজারির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন। বলেন, কোনো টিকিট কালোবাজারি হচ্ছে না। এখনো বিক্রি হচ্ছে। কাউন্টারে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে।