গৃহবধূর সঙ্গে পরকীয়া করে জীবন দিতে হলো ভাতিজাকে

নাটোরের লালপুরে মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে জুয়েল হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে। ত্রিভুজ প্রেমের কারণে নৃশংসভাবে গৃহবধূর ভাতিজা জুয়েলকে হত্যা করা হয়। জুয়েলের সঙ্গেও পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে তোলে ওই গৃহবধূ।

শুক্রবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এ দাবি করেন।

এ ঘটনায় ৩ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন- লালপুর উপজেলার দিলালপুরের এক গৃহবধূ (২৮), একই গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে মেহেদী হাসান লিটন (২০) এবং জিয়ারুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, লালপুর উপজেলার দিলালপুর মাঠের মধ্যে থেকে জুয়েলের লাশ পুলিশ উদ্ধার করে। সেখান থেকে আলামত হিসেবে পাওয়া মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের সূত্র ধরে প্রেমিকা গৃহবধূকে আটক করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী পুলিশ জানতে পারে তার আরেক প্রেমিক মেহেদী হাসান লিটন ও সৎ ছেলে মেহেদী হাসান পরিকল্পিতভাবে মোবাইলে জুয়েলকে ডেকে নেয়। পরে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হাতে পায়ের রগ কেটে ও কুপিয়ে জুয়েলকে হত্যা করে পার্শ্ববর্তী মাঠে লাশ ফেলে রাখে।

পুলিশ সুপার আরও জানান, ওই গৃহবধূর সঙ্গে ভাতিজা জুয়েল হোসেনের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে পারিবারিকভাবে জুয়েল ও সেলিনা খাতুনকে শাসন করা হয় এবং জুয়েলকে সেলিনা খাতুনের বাড়িতে যেতে নিষেধ করা হয়। কিন্তু সে নিষেধ না মেনে জুয়েল যাতায়াত করতে থাকলে ওই গৃহবধূর সৎছেলে ক্ষিপ্ত হয়। জুয়েলের সঙ্গে তার হাতাহাতি হয়।

অপরদিকে মেহেদী হাসান লিটনের আপন বড়ভাই সুমন সেলিনার ঘরে ঢুকে। এ সময় সেলিনা তাকে আটক করলে গ্রাম্য সালিশে সুমনের ৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এতে মেহেদী হাসান লিটন প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সেলিনা খাতুনের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন।

একপর্যায়ে ওই গৃহবধূ, মেহেদি হাসান লিটন এবং গৃহবধূর সৎছেলে পরস্পর যোগসাজশে জুয়েলকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক সেলিনা জুয়েলকে ডেকে নিয়ে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট বলে তাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয়। এরপর জুয়েল নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাকে পার্শ্ববর্তী মাঠে নিয়ে গিয়ে সেলিনা রেখে আসে। এ সময় মেহেদী হাসান লিটন ও মেহেদী ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পায়ের রগ কেটে জুয়েলকে হত্যা করে।

তিনি আরও জানান, পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে সেলিনা খাতুনকে গ্রেফতার করে। পরে মেহেদী হাসান লিটন ও মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করা হয় এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র চাকু ও কুড়াল ও মোবাইল সিম উদ্ধার করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৪ মার্চ লালপুর উপজেলার দিলালপুরে মাঠের মধ্যে থেকে হাত-পায়ের রগ কাটা ও কুপিয়ে জখম করা জুয়েলের লাশ পুলিশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জুয়েলের বাবা দিলালপুর গ্রামের সাকিম প্রামাণিক বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ