রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে কিশোর আব্দুর রহমান (১৭) খুনের ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ বলছে, মেলা থেকে কেনা খেলনা পিস্তল নিয়ে বিরোধের জেরেই বন্ধুদের হাতে খুন হয়েছেন ওই কিশোর।
কামরাঙ্গীরচর থানার এসআই জাহাঙ্গীর আল মামুন যুগান্তরকে বলেন, শুক্রবার নিহতের বাবা বাহার মিয়া বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি শামীম, আবির এবং ওয়াহেদ নামে তিন যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এসআই জানান, কামরাঙ্গীরচরের কুড়ারঘাটে ঈদ উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী একটি মেলা হয়। ওই মেলায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আব্দুর রহমান ও তার বন্ধুরা ঘুরতে যায়। আব্দুর রহমান মেলা থেকে একটি খেলনা পিস্তল কিনে। ফেরার পথে রাত পৌনে ৮টার দিকে রূপনগর এলাকায় খেলনা পিস্তলটি বন্ধুরা তার কাছ থেকে নিতে চায়। কিন্তু আব্দুর রহমান খেলনা পিস্তলটি না দেওয়ায় এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে বন্ধুদের ৩-৪ জন তাকে মারধর করে। এ সময় শামীম তার কাছে থাকা চাকু দিয়ে আব্দুর রহমানকে এলোপাতাড়ি আঘাত করলে আব্দুর রহমান মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। হামলাকারীরা তাকে রেখে পালিয়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাতেই তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি জানান, গ্রেফতার তিনজন আব্দুর রহমানের বন্ধু। তারা লালবাগ শহীদনগরে এক নম্বর গলিতে থাকে। আব্দুর রহমানও একই গলিতে থাকে।
কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ঘটনার সঙ্গে অন্য কারো সম্পৃক্ততা আছে কি না- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নিহতের মামা আরব আলী জানান, আব্দুর রহমান আগে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়ত। বছরখানেক আগে লেখাপড়া ছেড়ে বাবার কারখানায় গহনার কারিগর হিসেবে কাজ শুরু করে।
তিনি জানান, আব্দুর রহমানের বাবা বাহার মিয়া দুই বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে তিনি কামরাঙ্গীরচরের কুড়ারঘাট এলাকায় থাকেন। আর আব্দুর রহমান তার মা হেনা বেগমের সঙ্গে লালবাগের শহীদনগর ১ নম্বর গলি এলাকায় থাকত। কুড়ারঘাট এলাকায় মেলা হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকালে আব্দুর রহমান তার মাকে নিয়ে বাবার বাসায় যায়। ওইদিন সন্ধ্যায় সে ওই বাসা থেকে বেরিয়ে মেলায় যায়। মেলায় তার সঙ্গে শহীদনগর এলাকার কয়েক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়। তাদের সঙ্গে ঝগড়াঝাটির একপর্যায়ে সে ছুরিকাঘাতে খুন হয়।