‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর আলামত দেখছেন হাসনাত

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আমলের মতো কারচুপির ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, ‘একটা ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দিকে আবার আমরা যাচ্ছি। ২০২৪, ২০১৮ ও ২০১৪ সালের যে বিতর্কিত নির্বাচন হয়েছে, আমরা চাই না এই বিতর্কিত নির্বাচনের আর পুনরাবৃত্তি ঘটুক। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, যেভাবে নির্বাচনপ্রক্রিয়া চলছে, সেই প্রক্রিয়ায় আরেকটি প্রি-ইঞ্জিনিয়ার্ড নির্বাচন আবার জাতি উপহার পাবে।’ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এনসিপির সভায় এ কথা বলেন তিনি। এনসিপির ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) এবং ঢাকা জেলা শাখা নিয়ে এ সভা হয়।

নির্বাচনে প্রভাব খাটাতে রাজনৈতিক দলগুলো নানা মাত্রায় চেষ্টা করেছে অভিযোগ করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এখন সচিবালয়ে বসে ডিসি ভাগাভাগি চলছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে। যেমন চট্টগ্রামের ডিসি আমি নেব, উত্তরবঙ্গের দুইটা ডিসি আমাকে ছাড়তে হবে; যদি রংপুরের ডিসি ছাড়ি, তাহলে আমাকে আরেক জায়গার ডিসি ছেড়ে দিতে হবে।’

দলের নাম উল্লেখ না করে এনসিপি নেতা বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল তার নিয়ন্ত্রিত যে ব্যাংকগুলো দখল করেছে, যে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো দখল করেছে, সেই ব্যাংক এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের পোলিং এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, একটা রাজনৈতিক দল স্কুল কমিটিগুলো ও এগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদ দখল করেছে, শিক্ষকদের জিম্মি করেছে। আগামী নির্বাচনে কেন্দ্র দখল করার জন্য তাদের এখনই সশস্ত্র কায়দায় ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে।’

সেনানিবাসে থাকা ‘এক ব্যক্তি’ও নির্বাচনে প্রভাব খাটাতে চাইছেন বলে অভিযোগ করেন এই নেতা। নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘তিনি ক্যান্টনমেন্টে বসে বসে ষড়যন্ত্র করছেন, কাকে নির্বাচনে জেতাবেন আর কাকে নির্বাচনে হারাবেন।

আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে পুনর্বাসন করা হলে বাংলাদেশ ভারতের করদ রাজ্যে পরিণত হবে বলে জানিয়েছেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সবচেয়ে সুবিধাভোগী ছিল জাতীয় পার্টি। তারা আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনতে চাচ্ছে। কিন্তু দল দুটিকে নির্বাচনে আসার সুযোগ দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়নের পথ অন্ধকারে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার স্বাক্ষর অনুষ্ঠান করেছে। স্বাক্ষরের অনেক দিন পার হলেও সনদ বাস্তবায়নে আইনের ভিত্তি, আদেশ ও গণভোটের বিষয় জাতির সামনে স্পষ্ট করতে পারেনি তারা। অবিলম্বে সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার দাবি জানান আখতার।

সভায় এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, রাজনৈতিক জোট গঠনে আমরা কোন দিকে যাব– এমন প্রশ্ন এসেছে। আমরা বলব, জনগণ সংস্কার চায়। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিতে যারা সংস্কার প্রক্রিয়ার পক্ষে, তাদের সঙ্গে আমাদের জোট হতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিএনপি ও জামায়াত এগিয়ে এলে, আমরাও এগিয়ে যাব।

তিনি বলেন, আগামী সংসদ আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিমুক্ত দেখতে চাই। এ নিয়ে এনসিপি কাজ করে যাবে। আগামী সংসদে যারা সরকার গঠনের ইচ্ছা প্রকাশ করবে, এনসিপি সেখানে নির্ণায়কের ভূমিকা পালন করবে।

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সময় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ এনসিপিতে আসতে পারবে না।

অন্য দলের যে কোনো ভালো মানুষের জন্য আমাদের দরজা খোলা। এনসিপি দেশের ৪৬ নম্বর দল হতে আসেনি। আমরা জনগণের হয়ে সরকার গঠন অথবা শক্তিশালী বিরোধী দল হবো। জাতীয় পার্টির মতো পোষা বিরোধী দল হতে আমরা আসিনি।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ