মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে ‘সরকার পরিবর্তন’-এর ইঙ্গিত দিলেও বিশ্লেষকদের মতে, বিষয়টি যতটা সহজ মনে হচ্ছে, বাস্তবে ততটাই জটিল। এমনকি এর ফলাফলও ওয়াশিংটনের কল্পনার মতো নাও হতে পারে।
সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের বিশ্লেষণে এ কথা বলা হয়েছে।
সিএনএনের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন- ইরানে সরকার পতন হলেও এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইসরায়েলপন্থি প্রশাসনের গঠন কোনোভাবেই নিশ্চিত নয়। বরং এমন চরমপন্থি নেতৃত্ব ক্ষমতায় আসতে পারে যারা আমেরিকা ও ইসরায়েলের হামলার জবাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দ্রুত পরমাণু বোমা তৈরির পথেও এগোতে পারে।
তাদের মতে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি নিহত হলে তাকে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হলেও পুরো শাসনব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। যা ইরানকে টুকরো টুকরো করে দিতে পারে। এর ফলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার ঢেউ তুলতে পারে।
কোয়িনসি ইনস্টিটিউটের নির্বাহী সহ-সভাপতি ত্রিতা পারসি সিএনএনকে বলেন, ‘ইরানি সেনাবাহিনীর কিছু অংশ যদি ক্ষমতা গ্রহণ করে, তাহলে যে ধরনের সরকার যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাশা করে, সেটি পাওয়া যাবে না। বরং আরও কঠোর ও রক্ষণশীল শাসন আসার আশঙ্কা থাকবে।’
ত্রিতা পারসি আরও বলেন, ‘ইরান এমন একটি দেশ যেখানে বহু বছর ধরে বিভিন্ন জাতিগত ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে আসছে। শাসনব্যবস্থা পুরোপুরি ধসে পড়লে এসব গোষ্ঠী সুযোগ নিয়ে দেশটিকে আরও বিভক্ত ও অস্থির করে তুলতে পারে।’
পারসি বলেন, ‘শাসনব্যবস্থার পতন মানেই হচ্ছে রাষ্ট্রের পতন, যার পরিণতিতে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে, তা দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে।’
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আজীবনের জন্য নির্বাচিত হন ৮৮ সদস্যবিশিষ্ট এক্সপার্ট অ্যাসেম্বলির মাধ্যমে। তবে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো উত্তরসূরির নাম ঘোষণা করেন না।
তবে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, খামেনি নিহত হলে তার উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনার জন্য তিনজন জ্যেষ্ঠ ধর্মগুরুর নাম ইরানি কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনায় আছে বলে দাবি করেছেন দেশটির তিনজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শাসন পরিবর্তনের প্রক্রিয়া যতটা অনিশ্চিত, ততটাই ঝুঁকিপূর্ণ—যেখানে দেশের অভ্যন্তরীণ বিভাজন, চরমপন্থার উত্থান ও আঞ্চলিক অস্থিরতা একসঙ্গে দেখা দিতে পারে।