ইতালিতে ‘ডিক্রিটো ফ্লুসি’ জালিয়াতির মূল হোতা বাংলাদেশি গ্রেফতার

ইতালির অভিবাসন নীতি ‘ডিক্রিটো ফ্লুসি’ কে হাতিয়ার বানিয়ে বিশাল জাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা চক্রের সন্ধান পেয়েছে দেশটির আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

সোমবার (৩ নভেম্বর) ভোরে চিয়েতি এর ক্যারাবিনিয়ারি এনআইএল, পেস্কারা, এল’আকুইলা এবং তেরামো’র সামরিক কর্মীদের সহায়তায় এবং এল’আকুইলা এর নির্দেশ মোতাবেক তাকে গ্রেফতার করে দেশটির আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

এই অবৈধ কারবারে প্রায় তিন মিলিয়ন ইউরো ব্যবসা হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে ৪৫ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নেতৃত্বেই এই চক্রটি দুই বছর ধরে ইতালিতে এবং বাংলাদেশে একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জাল ভিসা বিক্রি করে আসছিল।

গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন এই অপরাধী চক্রের প্রধান এবং মূল হোতা। কারাবিনিয়ারি এর সিটি নিউক্লিও ইস্পেত্তোরাতো দেল লাভোরো ডিডিএ দেল’আকুইলা’র নির্দেশে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি ব্যক্তিটি ইতালিতে অন্তত ছয়টি কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত। এই কোম্পানিগুলো অবৈধ অর্থ সংগ্রহ ও পাচারের জন্য ব্যবসায়িক আড়াল হিসেবে ব্যবহৃত হতো। পুলিশি তদন্তে ২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই কোম্পানিগুলোতে প্রায় ৬০ হাজার ইউরো নগদ জমা করার প্রমাণ মিলেছে।

এই চক্রের মূল উদ্দেশ্য ছিল ‘ডিক্রিটো ফ্লুসি’র মাধ্যমে বিদেশি শ্রমিকদের ইতালিতে কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট কোটা বা সুযোগকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে বিপুল অর্থ উপার্জন করা। প্রতিটি জাল ভিসা ১৮ হাজার থেকে ২০ হাজার ইউরো মূল্যে বিক্রি করা হতো। জাল ভিসার পাশাপাশি চক্রটি আবাসন, বাসস্থান এবং জাল বেতন স্লিপের মতো আনুষঙ্গিক পরিষেবাও বিক্রি করত। তার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আরও ১৯ জন বাংলাদেশি, ইতালীয় এবং ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ অপরাধ, অবৈধ অভিবাসনে সহায়তা, সরকারি নথিপত্র জালিয়াতি ও ব্যবহার, গুরুতর প্রতারণা, অর্থপাচার, চাঁদাবাজির চেষ্টা এবং ডাকাতির মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।

এই জালিয়াতির প্রথম প্রমাণ মেলে ২০২১ সালের ‘ডিক্রিটো ফ্লুসি’র সময়। তখন অভিযুক্তদের মধ্যে দুজন একটি অসৎ প্যাট্রোনাটো (শ্রমিক সহায়তা কেন্দ্র) এর মাধ্যমে শত শত বিদেশি কর্মীর প্রবেশের জন্য আবেদন করেন। এরপর ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ ‘ক্লিক ডে’ তে আবেদন জমা দেওয়ার জন্য একটি ভূঁইফোড় কোম্পানি গঠন করা হয়েছিল। এই বড় অভিযানের আগেই ২০২৩ সালের জুলাই মাসে দু’জন ইতালীয় কর্মকর্তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে জাল ‘নুলা ওস্তা’ (কর্মসংস্থান অনুমোদন) এবং ১৭ হাজার ৭৬০ ইউরো নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ