আসছে খাদ্য বিপর্যয়

ইউক্রেনে আক্রমণ চালিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে যোজন যোজন দূরেও অনেক প্রাণহানির কারণ হতে পারে। এবং সেই প্রাণহানির সংখ্যা এতো বেশি হতে পারে যে হয়তো পুতিনও তা দেখে আফসোস করবেন। করোনা মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি সংকটের কারণে ইতোমধ্যেই ধুঁকতে থাকা বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থায় বোঝার ওপর শাকের আঁটি হয়ে চেপে বসেছে এই যুদ্ধ।

ইউক্রেনের শস্য ও তেলবীজ রফতানির যুদ্ধের কারণে ইতোমধ্যেই স্থবির হয়ে পড়েছে। রাশিয়ার পণ্য রফতানিও রয়েছে ঝুঁকির মুখে। যুদ্ধরত এই দুই দেশই বিশ্বের মোট ক্যালোরির শতকরা ১২ শতাংশ সরবরাহ করে। চলতি বছরের শুরুতেই গমের দাম ৫৩ শতাংশ বাড়ে। এরপর ভারত গম রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর আরও ৬ শতাংশ বেড়েছে গমের দাম।

তবে জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকটের বহুলভাবে গৃহীত ধারণা সামনে কী আসতে চলেছে সে সম্পর্কে ধারণাও করতে পারছে না। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস গত ১৮ মে সতর্ক করে বলেছেন, আগামী মাসগুলোতে ‘বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ খাদ্য ঘাটতির‘ হুমকির সম্মুখীন হতে পারে। এই খাদ্য ঘাটতি কয়েক বছর স্থায়ী হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।

প্রধান খাদ্যদ্রব্যের উচ্চ মূল্যের কারণে ইতোমধ্যে বিশ্বে পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে না এমন মানুষের সংখ্যা ৪৪০ মিলিয়ন থেকে ১.৬ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে । বিশ্বের প্রায় আড়াইশ মিলিয়ন মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। যদি যুদ্ধ চলতে থাকে এবং রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে খাদ্য সরবরাহ সীমিত হয়, তাহলে আরও কয়েক মিলিয়ন মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর ফলে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়বে, শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগবে, মানুষ অনাহারে থাকবে।

এই পরিস্থিতিতে পুতিন অবশ্যই খাবারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করবেন না। অভাব যুদ্ধের অনিবার্য ফলাফল নয়। বিশ্ব নেতাদের ক্ষুধাকে একটি বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে দেখা উচিত। যে সমস্যার জরুরি ভিত্তিতে একটি বৈশ্বিক সমাধান প্রয়োজন।

সূত্র: দ্য ইকোনোমিস্ট

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ