বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কিছু সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ ভূমিকা নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মহলে আলোচনার মধ্যে এবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে ৩৭ জন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকের।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ এবং সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়ার সই করা এক নোটিসে বলা হয়, গত ২৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
‘জুলাইয়ের বিপ্লবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গণহত্যায় উসকানি প্রদান এবং পতিত সরকারের দোসর হিসেবে কাজ করার দায়ে’ তাদের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে বলে জানানো হয় সেখানে।
প্রবল গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পতনের পর গত ১০ অগাস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদককে একটি চিঠি পাঠান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল কাদের ও আবদুল হান্নান মাসুদ।
তাতে প্রেস ক্লাবের সদস্য ৫০ জন সাংবাদিকের একটি তালিকা দিয়ে বলা হয়, তারা প্রতিনিয়ত পুলিশ ও আওয়ামী লীগকে মদদ এবং উসকানি দিয়েছেন। এভাবে তারা ছাত্রদের বিরুদ্ধে ‘মানবতাবিরোধী’ অপরাধে জড়িত ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে এসব সাংবাদিককে সাংবাদিকতা অঙ্গনে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলেন আব্দুল কাদের ও আবদুল হান্নান।
প্রেস ক্লাবের সদস্যপদ স্থগিত হওয়াদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের দেওয়া তালিকায়।
সোমবার যাদের সদস্যপদ স্থগিত করা হয় তারা হলেন- নূরুল আমিন প্রভাষ, জায়েদুল আহসান পিন্টু, মোজাম্মেল বাবু, আশীষ সৈকত, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সোহেল হায়দার চৌধুরী, ফারজানা রূপা, অশোক চৌধুরী, আজমল হক হেলাল, আবুল খায়ের, মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, প্রণব সাহা, নঈম নিজাম, খায়রুল আলম, আবেদ খান, সুভাষ চন্দ বাদল, জহিরুল ইসলাম মামুন (জ.ই মামুন), জাফর ওয়াজেদ, সাইফুল ইসলাম কল্লোল, পাভেল রহমান, আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, শাবান মাহমুদ, মুহম্মদ শফিকুর রহমান, আবুল কালাম আজাদ, শ্যামল সরকার, অজয় দাশগুপ্ত, আলমগীর হোসেন, রমাপ্রসাদ সরকার বাবু, সঞ্জয় সাহা পিয়াল, ফারাজি আজমল হোসেন, আনিসুর রহমান, এনামুল হক চৌধুরী, নাঈমুল ইসলাম খান, মো. আশরাফ আলী, মোল্লা জালাল, ইখতিয়ার উদ্দিন এবং আবু জাফর সূর্য।
এর মধ্যে গত ২১ অগাস্ট বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ ও সাবেক প্রিন্সিপাল করেসপনডেন্ট ফারজানা রূপাকে দেশ ছাড়ার আগে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে ১৬ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার হন সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্ত। দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
তারা প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় একাধিক মামলা হয়েছে।