সাধারণ মানুষকে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে ৩০০ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে একটি প্রতিষ্ঠান। এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত সাভারের আশুলিয়ায় চেতনা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামের ওই প্রতিষ্ঠানের সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক।
এর আগে মঙ্গলবার থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত র্যাব-৪ ও সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট রাকিব মাহমুদ খানের নেতৃত্বে আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- মো. ইকবাল হোসেন সরকার, মো. মাজহারুল ইসলাম, মো. মমিন হোসেন, মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. মিজানুর রহমান, মো. আল আমিন হোসেন, ইব্রাহিম খলিল, এসএম মকবুল হোসেন, ফজলুল হক ও মো. নূর হোসেন।
এ সময় তাদের অফিস থেকে ভর্তি ফরম, ঋণগ্রহীতার ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র, ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের জীবন বৃত্তান্ত, লিফলেট, সিল, বিভিন্ন নামে সঞ্চয় পাশবই, অব্যবহৃত পাশ বই, দৈনিক কিস্তি, ঋণ বিতরণের বিভিন্ন রেজিস্টার, ব্যাংক চেকসহ ব্যাংক স্ট্যাম্প, আইডি কার্ড, দৈনিক কিস্তি আদায়ের শিট, বিভিন্ন প্রকার সার্টিফিকেট, চেক বই, মনিটর, সিপিইউ, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
তাদের গ্রেফতারের পর আজ সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে মো. মোজাম্মেল হক বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে- এক হাজারের অধিক পরিবারের প্রায় ৩শ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এ চক্রটি।
তিনি বলেন, এ প্রতারক চক্রের মাঠপর্যায়ের কর্মী সদস্য রয়েছে। এরা ঢাকার আশুলিয়া, সাভার ও ধামরাই এলাকার মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষদের টার্গেট করে ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা মাসিক লভ্যাংশ এবং স্বল্প সময়ে মাসিক মেয়াদ শেষে অধিক মুনাফা লাভের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে উদ্বুদ্ধ করত। ভিকটিমদের প্রলুব্ধ করতে তারা বিভিন্ন প্রজেক্ট, গাছের বাগান, ডেইরি ফার্ম, ফ্ল্যাট ও প্লটের প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে প্রতারক চক্রের অফিস কার্যালয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করত। তারা ভিকটিমদের বুঝাত যে তাদের কাছে এফডিআর করলে ১ লাখ টাকায় মাসে ১ হাজার ৮০০ টাকা লভ্যাংশ প্রদান করা হবে, প্রকৃতপক্ষে যা বাংলাদেশে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান দিতে পারে না।
গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। তবে অসাধু সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।