হাওরে বেড়াতে গিয়ে বন্যায় আটকা পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থীদের সেনাবাহিনীর সহায়তায় সুরমা নদীর চর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তি আইএসপিআর বলছে, শিক্ষার্থীসহ যারা লঞ্চ নষ্ট হয়ে আটকা পড়েছিলেন, তাদের ছাতক থেকে উদ্ধার করে সিলেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এর আগে গতকাল শনিবার দুপুর ২টার দিকে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনস থেকে কপোতাক্ষ অনির্বাণ ট্যুরিজম বোট নামে একটি লঞ্চে করে সিলেট শহরের দিকে রওনা দেন ওই শিক্ষার্থীরা। লঞ্চে তার সঙ্গী হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ১৭ জন এবং জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। সব মিলিয়ে ওই লঞ্চে যাত্রী ছিলেন প্রায় ৮০ জন। কিন্তু রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে গেলে দোয়ারাবাজার সংলগ্ন সুরমা নদীর চরে আটকা পড়েন সবাই।
তারেক রহমান নামে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষার্থী রাতে ফেসবুক পোস্টে লেখেন, মাত্রই ফোনে নেট কানেকশন পেলাম। সুনামগঞ্জ থেকে সিলেট আসার পথে আমাদের লঞ্চটা বাজেভাবে আটকে গেছে। যে কোনো সময় যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। গত তিনদিনের ভয়ানক পরিস্থিতিতে আমরা মানসিকভাবে মারাত্মক বিপর্যস্ত।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক আবুল মনসুর আহাম্মদ রাতে গণমাধ্যমকে জানান জানান, লঞ্চে আটকা পড়া যাত্রীদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর একটি দল রওনা হয়েছিল। কিন্তু নদীতে প্রবল স্রোত, বৃষ্টি আর অন্ধকারে পথ খুঁজে পেতে সমস্যা হওয়ায় অর্ধেক পথ থেকে তাদের ফিরে যেতে হয়। এরপর সকালে তাদের উদ্ধার করে সিলেটে নিয়ে যাওয়ার কথা জানায় আইএসপিআর।
গত ১৪ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ওই ২১ শিক্ষার্থী টাঙ্গুয়ার হাওরে ভ্রমণে যান। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে শহরের ‘পানসী’ রেস্তোরাঁয় আশ্রয় নেন তারা। সেখানে বিদ্যুৎ, খাবার, সুপেয় পানিসহ নানা সংকটের কথা জানিয়ে তারা উদ্ধারের আর্তি জানিয়েছিলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধে শুক্রবার বিকালে ‘পানসী’ রেস্তোরাঁ থেকে তাদের জেলা পুলিশ লাইনসে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক।