সাগর-রুনি হত্যার বিচার পেতে আর কত অপেক্ষা সাংবাদিক সমাজের!

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় ১০১ বার পেছানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও চরম হতাশা প্রকাশ করেছে ডিআরইউ।

সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) ডিআরইউ কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী এবং সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল এ উদ্বেগ জানান। অতি দ্রুত তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।

সোমবার সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু র‌্যাবের পক্ষ থেকে আজো আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়নি। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট রাশিদুল আলম আগামী ১৫ অক্টোবর এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছেন।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি নৃশংসভাবে খুন হন। সাগর মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক ও মেহেরুন রুনি এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ছিলেন।

সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। প্রথমে এই মামলা তদন্ত করছিল শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ। চার দিন পর মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।

তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। এরপর আদালত র‌্যাবকে মামলা তদন্তের নির্দেশ দেন। তখন থেকে মামলাটির তদন্ত করছে র‌্যাব।

ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি খুন হওয়ার দিন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন (প্রয়াত) বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতার করা হবে। খুনের দুই দিন পর পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহামুদ খন্দকারও বলেছিলেন, তদন্তের প্রণিধানযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর চললেও এখনো তদন্ত প্রতিবেদনই জমা পড়েনি। এটা হতাশাজনক। সাংবাদিক সমাজ বিশেষ করে ডিআরইউ এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই দোষীদের গ্রেফতার করে বিচার ত্বরান্বিত করার দাবি জানিয়ে নিয়মতান্ত্রিক এমন কোনো কর্মসূচি নেই যা পালন করেনি। কিন্তু কোনো অজানা কারণে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত রিপোর্টই জমা পড়ছে না, এ নিয়ে সাংবাদিক সমাজসহ সারাদেশের মানুষের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তাহলে কী সাগর-রুনির পরিবার ন্যায্য বিচার পাবেন না? আর কত অপেক্ষা করতে হবে সাংবাদিক সমাজের?

নেতৃবৃন্দ বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি এই দাবি থেকে কোনো অবস্থাতেই সরে যাবে না। ডিআরইউ বিচারাধীন কোনো বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে চায় না। কিন্তু সাগর-রুনি হত্যার বিচার না পাওয়ায় আমরা সাংবাদিক সমাজ অত্যন্ত হতাশ। আমরা এই সাংবাদিক দম্পত্তির এক মাত্র ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘের মুখের দিকে তাকাতে পারি না, আমরা তার কাছে জবাব দিতে পারি না, কেন তার বাবা-মাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা আগেও বলেছি, এখনো বলছি, র‌্যাব যদি এই তদন্ত শেষ না করতে পারে, প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারে, সেটাও তারা আদালতকে জানাতে পারেন। আমার এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচারটা চাই, বিচার চাই, বিচার চাই।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on linkedin
LinkedIn
Share on print
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ