মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুসহ শাজাহানপুরে জোড়া খুনের শুটার মাসুম ওরফে আকাশ বর্ডার দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। তবে গোয়েন্দা নজরদারি ও প্রযুক্তির সহযোগিতা তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রোববার (২৭ মার্চ) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার।
হাফিজ আক্তার বলেন, বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাতে ঘটনার পরপরই নিজস্ব প্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দারা। তারই অংশ হিসেবে তথ্য আসে মাসুম ঘটনার পরপরই একটি বাসে করে জয়পুরহাটের দিকে চলে যায়। পরে জয়পুরহাট সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি জয়পুরহাট ও বগুড়ার আশপাশের এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত থাকে।
তারই অংশ হিসেবে বগুড়া জেলা পুলিশের সহযোগিতায় শনিবার (২৬ মার্চ) রাতে বগুড়া জেলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাসুম বগুড়ায় অবস্থান করে জয়পুরহাট সীমান্ত দিয়ে সুবিধাজনক সময়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতিও ছিল তার।
ঘটনার দিন মাসুম গোপনে সংবাদ পায় মতিঝিল এজিবি কলোনি সংলগ্ন কাঁচা বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা টিপু রেস্টুরেন্টে আছে। এরপর মাসুম আসে এবং গুলি করার প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু টিপু অনেক লোকজনের মধ্যে থাকায় গুলি করতে না পেরে গাড়ি অনুসরণ করতে থাকে। গাড়িটি শাজাহানপুর লাইনের আগে আমতলা রাস্তায় যানজটে আটকা পড়লে মাসুম টিপুকে লক্ষ্য করে উপর্যপুরি গুলি করে পালিয়ে যায়। সঙ্গে তার দুই বন্ধু ছিল বলেও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
এটি কি কোনো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড? এমন প্রশ্নে গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, আপাতত আমরা তিন থেকে চারটি মোটিভ নিয়ে কাজ করছি। তবে এখন শুধুমাত্র তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে।
অপর প্রশ্নে তিনি বলেন, ঘটনার ৫ দিন আগে মাসুমকে কিলিং মিশনে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু চুক্তির তিন দিনের মাথায় সে চূড়ান্ত মিশন সফল করার অভিপ্রায়ে টিপুকে অনুসরণ করে। তারই অংশ হিসেবে তাকে এলোপাথাড়ি গুলি করে। তবে তাকে কেউ ভাড়া করেছিল কি-না বা কত টাকায় কাজ করেছে, পাশাপাশি অস্ত্রটি কোথায় তা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়নি।
কলেজছাত্রী সমিয়া আফরান প্রীতিকে তাহলে কেন হত্যা করা হলো, এ বিষয়ে মাসুম কি কিছু বলেছে?- এমন প্রশ্নে হাফিজ আক্তার বলেন, পিস্তলের ট্রিগারে চাপ দেওয়া ছিল। যে কয়টা গুলি ছিল তার সবই বের হয়ে যায়। মূলত এ কারণেই প্রীতি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। কিন্তু প্রীতিকে হত্যা করার কোন উদ্দেশ্য তার ছিল না। মাসুম নিজে একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার। পাশাপাশি তার বাবা একজন স্কুল শিক্ষকও। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৪ থেকে ৫টি মামলা রয়েছে।