যেসব দেশের ট্যাংক পাচ্ছে ইউক্রেন

দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষা শেষ। এবার বহুল কাঙ্ক্ষিত জার্মান লেপার্ড-২ ট্যাংক আর মার্কিন আব্রামসের দেখা পেতে যাচ্ছে ইউক্রেন।

বুধবার এ তথ্যই প্রচার হয়েছে জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গণমাধ্যমে। ট্যাংকটিকে ১১ মাস যুদ্ধের ‘গেইম চেঞ্জার’ হিসাবে দেখছেন ইউক্রেন ও তার মিত্ররা।

ট্যাংক পেয়েই জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

বুধবার টুইটার পোস্টে বলেন, ‘জার্মানির প্রধান যুদ্ধ ট্যাংক প্রদান, অন্যদেরও অনুমোদন দিয়ে সামরিক সহায়তা প্রদান চান্সেলর শলৎজের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। তাকে এবং আমার মিত্রদের আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

জার্মানির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। তিনি টুইটারে জানান, ‘অবশেষে সঠিক সিদ্ধান্তে এসেছে ন্যাটো মিত্ররা। ব্রিটিশ ট্যাংক চ্যালেঞ্জার-২ এর পাশাপাশি এই ট্যাংকগুলো কিয়েভের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে। অভিবাদন জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাত্রেঁদ্ধাও।

বুধবার তার মুখপাত্র জানান, ‘জানুয়ারিতে কিয়েভকে হাল্কা ট্যাংক এএমএক্স-১০আরসি দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি ফ্রান্স দিয়েছিল জার্মানির বর্তমান সিদ্ধান্তে তারই সম্প্রসারণ ঘটছে।’ ট্যাংক পাঠাতে এগিয়ে এসেছে স্পেনও। ট্যাংক দিয়ে কিয়েভকে সহায়তা করতে চায় দেশটি। বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্পেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্গারিটা রোবেলস।
জানান, ‘লেপার্ড দেওয়া কিংবা প্রশিক্ষণ যেই মাধ্যমেই হোক স্পেন সব সময় তার মিত্র দেশের পাশে থেকে শত্র“দের প্রতিহত করবে।’

এক সপ্তাহ ধরে বার্লিন-ওয়াশিংটন দরকষাকষির পর বুধবার জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ অবশেষে লেপার্ড-২ দিতে রাজি হয়েছেন। শর্ত মেনে যুক্তরাষ্ট্রও দেবে আব্রামস ট্যাংক। এছাড়া পোল্যান্ড ও ফিনল্যান্ডের মতো দেশগুলোকে ট্যাংক পাঠাতেও অনুমতি দিয়েছে লেপার্ডের নির্মাতা দেশ জার্মানি।

মার্কিন কর্মকর্তারা গণমাধ্যমে জানান, যুক্তরাষ্ট্র আগামী মাসে ইউক্রেনে প্রায় ৩০টি এম১ আব্রামস সরবরাহ করতে পারে। স্পিগেল মিডিয়া আউটলেটের তথ্য অনুসারে, জার্মানি তার সেনাবাহিনী ‘বুন্দেসওয়েরের’ স্টকে থাকা কমপক্ষে ১৪টি লেপার্ড-টুর একটি ব্রিগেড সরবরাহ করবে। ঠিক কতগুলো ট্যাংক পাঠানো হবে জার্মান সরকার এই ব্যাপারে এখনো কোনো ঘোষণা দেননি। ন্যাটো সদস্য নরওয়ে ইউক্রেনে জার্মান-তৈরি লিওপার্ড ২ ট্যাঙ্ক পাঠাবে কিনা তা বিবেচনা করছে।

মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে অসলোভিত্তিক সংবাদপত্র আফটেনপোস্টেন এবং দাগেনস নায়েরিংস্লিভ। দেশটিতে থাকা ৩৬টি ‘লেপার্ড-২’ এর মধ্যে ৪ থেকে ৮টি ইউক্রেনে সরবরাহ করা যেতে পারে। নরওয়ের সঙ্গে রাশিয়ার সীমান্ত রয়েছে। যদিও এক সপ্তাহ আগেই জটিল প্রক্রিয়া আর দীর্ঘ প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তার অজুহাতে ট্যাংক দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

এদিন সন্ধ্যায় দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগত যোগাযোগের সমন্বয়ক জন কিরবি বলেন, ‘আব্রাম ট্যাংক অবিশ্বাস্যভাবে সক্ষম তবে এটি পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও জটিল। এতে জেট ইঞ্জিন রয়েছে। তবে এর অর্থ এই নয় যে, ইউক্রেনীয়রা এর ব্যবহার শিখতে পারে না।’

ক্রেমলিন জানায়, ইউক্রেনে ট্যাঙ্ক সরবরাহ করলে তাতে বাস্তবতার কোনো পরিবর্তন ঘটবে না। বরং ‘কিয়েভ রাশিয়াকে হারাবে’ বলে পশ্চিমারা যে ভ্রমের মধ্যে আছে তার জন্য অনুশোচনা করতে হবে।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনভ টেলিগ্রামে জানান, ওয়াশিংটনের কিয়েভে আব্রামস ট্যাঙ্কের সরবরাহের অর্থ মস্কোর বিরুদ্ধে আরেকটি ভয়ংকর উসকানি। এটা স্পষ্ট যে, ওয়াশিংটন উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের কৌশলগত পরাজয় দেখতে চায়।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ‘প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্রের’ যুক্তি দিয়ে ট্যাঙ্ক সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নেয় তবে এই ধরনের পদক্ষেপ কাজে আসবে না। এটি রাশিয়ান ফেডারেশনের বিরুদ্ধে ভয়ংকর উসকানি হবে।’

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ