রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দেখলে একজন নিঃসঙ্গ মানুষ বলে মনে হয়।
তিনি রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে এমন ঝুঁকিপূর্ণ একটি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছেন, যা তার দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ফেলতে পারে। খবর বিবিসির।
প্রেসিডেন্ট পুতিনকে নিজের একান্ত ঘনিষ্ঠ মানুষদের সঙ্গে সাম্প্রতিক দুটি বৈঠকে যেভাবে দেখা গেছে, সেরকম বিচ্ছিন্ন অবস্থায় তাকে দেখা যাওয়ার ঘটনা বেশ বিরল। ছবিতে দেখা যায়, তিনি তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের থেকে অনেক দূরত্বে বসে আছেন।
কমান্ডার ইন চিফ বা সর্বোচ্চ অধিনায়ক হিসাবে, যেকোনো ধরণের যুদ্ধাভিযানের চূড়ান্ত দায়িত্ব তার ওপরই বর্তায়।
তবে তিনি এক্ষেত্রে সবসময় তার অত্যন্ত অনুগত কিছু লোকজনের ওপর নির্ভর করেন, যাদের মধ্যে অনেকেই রাশিয়ার নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থায় তাদের কর্মজীবন শুরু করেছিলেন।
প্রশ্ন হল, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার মেয়াদকালের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তগুলোতে কারা তাকে পরামর্শ দিচ্ছে?
যদি এমন কেউ থাকেন, তবে তাদের মধ্যে রয়েছেন দীর্ঘদিনের আস্থাভাজন সের্গেই শোইগু, যিনি ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ এবং পশ্চিমাদের তথাকথিত সামরিক হুমকি থেকে রাশিয়াকে রক্ষা করার জন্য এই লড়াই দরকার বলে পুতিনের কথারই পুনরাবৃত্তি করে গেছেন তোতাপাখির মতো।
তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিনের এতটাই ঘনিষ্ঠ যে, তার সঙ্গে শিকার করতে এবং মাছ ধরতে সঙ্গী হিসেবে সাইবেরিয়ায় যান এবং তাকে একসময় পুতিনের সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসাবে দেখা হয়েছিল।
কিন্তু এই অসাধারণ ছবিতে দীর্ঘ টেবিলের আরেক প্রান্তে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের পাশে বেকায়দা ভঙ্গিতে বসে থাকা তার চেহারার দিকে তাকান। এতদূর থেকে তিনি আসলে প্রেসিডেন্ট পুতিনের কানে কতোটা কথা পৌঁছাতে পারছেন, সে প্রশ্ন আপনার মনে জাগতে পারে।
এই ছবিটি তোলা হয় ইউক্রেনে তিন দিনের মাথায় রাশিয়ার সামরিক অভিযান যখন অপ্রত্যাশিত তীব্র প্রতিরোধের মুখে রীতিমত হিমসিম খাচ্ছে, রুশদের মনোবল যখন বেশ দুর্বল।
সমর বিশেষজ্ঞ ভেরা মিরোনোভা বলেন, শোইগুর তো কুচকাওয়াজ করে কিয়েভে যাওয়ার কথা।তিনি রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং এই লড়াইয়ে তার জয়ী হওয়ার কথা ছিল।
২০১৪ সালে সামরিক অভিযান চালিয়ে ক্রাইমিয়া দখলের সাফল্যের কৃতিত্ব তাকে দেয়া হয়।
তিনি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা জিআরইউর দায়িত্বেও ছিলেন। নার্ভ এজেন্ট প্রয়োগ করে বিষক্রিয়ার দুটি ঘটনার জন্যও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে।
যুক্তরাজ্যের সলসবারিতে ২০১৮ সালের ভয়াবহ হামলা এবং ২০২০ সালে সাইবেরিয়ায় বিরোধী নেতা অ্যালেক্সই নাভালনির ওপর প্রাণঘাতী হামলার পেছনেও ছিল তার নাম।