মিয়ানমারে ফিরব, না হয় ‘শূন্যরেখায় মরব’

শূন্যরেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের নিয়ে এবার নতুন খেলায় মেতে উঠেছে মিয়ানমার বাহিনী। তাদের শূন্যরেখা থেকে তাড়াতে আগ্রাসী আচরণের পাশাপাশি কাঁটাতার ঘেঁষে বাড়িয়ে দিয়েছে সৈন্য, প্রতিনিয়ত করছে গোলাগুলি ও গোলার বিস্ফোরণ।

গত এক মাসের বেশি সময় ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালেও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে সীমান্ত এলাকাজুড়ে।

এমন পরিস্থিতিতে শূন্যরেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক বিরাজ করলেও তারা বলছেন, ‘হয় স্বদেশ মিয়ানমারে ফিরব, না হয় এই শূন্যরেখায় মরব।’

শূন্যরেখার রোহিঙ্গা আরকানি বলেন, মিয়ানমার সেনাদের হাতে বড় বড় বোমা রয়েছে। হাতে রাইফেল, কাঁধে গুলি নিয়ে টহল দিচ্ছে। আর এসব নিয়ে হরদম গোলাগুলি করছে। আর তাদের হাতে সর্বদাই হাতবোমা দেখা যায়। যে কোনো সময় মেরে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু তাতেও পিছু হটব না। হয় মরে যাব, না হয় নিজের দেশে ফিরে যাব।

এদিকে একটি সূত্র জানায়, সীমান্তে প্রতিনিয়ত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গোলাগুলি ও মর্টারশেলের গোলার কারণে নিরাপত্তা চেয়ে জাতিসংঘের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে শূন্যরেখার রোহিঙ্গারা।

শূন্যরেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গা ফাতেমা খাতুন বলেন, মিয়ানমার সরকার আমাদের গুলি মারছে। দেড় মাস ধরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ভয় দেখাচ্ছে। আমরা যাতে শূন্যরেখা থেকে চলে যাই। এদিক-ওদিক গুলি করছে, বোমা ফাটাচ্ছে কিন্তু আমাদের প্রতিজ্ঞা আমরা শূন্যরেখা ছাড়ব না। প্রয়োজনে নিজের দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাব। না হয় এখানে তাদের অত্যাচারে মরে যাব।

জিহাদি নামের আরেক রোহিঙ্গা বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গোলার আঘাতে আমাদের শূন্যরেখার এক রোহিঙ্গা মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে আরও ৫ জন। তারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আমরা শূন্যরেখায় রয়েছি, এখান থেকে কোথাও যাব না, যদি বিদেশিরাও নিয়ে যায়, তাও না। শুধু নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরব নাগরিক অধিকার নিয়ে।

এদিকে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে শূন্যরেখার কাঁটাতার ঘেঁষে বেড়েছে মিয়ানমার সেনাদের অবস্থান, বাড়িয়েছে ক্যাম্পও। আর প্রতিদিনই চলছে গোলাগুলি ও মর্টারের গোলার বিকট শব্দ। এরই মধ্যে গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মিয়ানমার সেনাদের ছোড়া গোলার আঘাতে মারা যান শূন্যরেখায় বসবাস করা এক রোহিঙ্গা আর আহত হন ৫ জন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল, গোলাগুলিসহ নানা ভারি অস্ত্রের আওয়াজে এপারের ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু ও বাইশফাঁড়ি এলাকার ২৪ হাজার মানুষ চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ